পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

উঠিল। মধ্যাহ্নের আহার শেষ করিয়া হুঁকাটি হাতে লইয়া বারান্দায় বসিয়া আছি, হঠাৎ নীচে হইতে একটু জোর গলার আওয়াজ পাওয়া গেল। শুনিলাম বড়-বৌ বলিতেছে, “মরণ আর কি, ব’ল্‌তে একটু লজ্জা হয় না, তোমার জন্য আতপ চালের কাঁড়ি কত যোগাবো? অতি বিনীতভাবে শাশুড়ী উত্তর করিল, “আতপ চাল কালই ফুরিয়েছে, তাত তখনই তোমাকে বলেছি বউমা। বড় ছেলের সম্মুখে কোন কথা বলিতে আমার বড় লজ্জা করে, তাই তোমাদের বিরক্ত করি।”

 “লজ্জাবতী লতা আর কি? যখন নিজের জন্য কাঁড়ি কাঁড়ি আনাজ কুটে নিয়ে যঞ্জি কর্‌তে বসেন, তখন লজ্জা থাকে কোথায়? আমায় বল্লেই কি ফুরিয়ে গেল? আমার এত কি গরজ যে, তোমার চালের কথাটি মুখস্থ করে রাখ্‌ব?”

 শাশুড়ী অতি কাতরভাবে বলিল, “আমি ত সকাল বেলাই তোমায় একবার মনে করে দিয়েছিলুম, তা তুমি বল্লে, “হাঁ তা হবে এখন।“আমি তোমাদের খাওয়া দাওয়া হ’লে নিজের ঝালের ঝোল চড়িয়ে দিয়ে চাল আনতে গিয়েছিলুম; তা জালায় হাত দিয়ে দেখি যে, একটি কুটাও নাই।”

 মেজ-বৌ আঁচল পাতিয়া নীচের বারান্দায় শুইয়াছিল, শাশুড়ীর কথা শেষ হইবা মাত্র মুখ ফিরাইয়া বলিয়া উঠিল, “দেখ বাছা, খেটে খুটে তোমার জন্য একটু আরাম করবার যে নাই; একদিন আতপ চাল ফুরিয়েছে, সিদ্ধ চাল খেলেই পার! এত বেলায় কে আর তোমার জন্য চাল্‌ আন্‌তে যাচ্ছে বল? তোমার অত পটপটানি কেন? যা রয় সর তাই ভাল।” ব্রাহ্মণকন্যা আর কোন কথা না বলিয়া রান্না ঘরে প্রবেশ

৪৮