পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

বল্লভ মুখোপাধ্যায়ের পুত্রগণের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান এবং বিষয়কর্ম্মে পারদর্শী, কিন্তু কুটবুদ্ধির জন্য পিতার প্রিয়পাত্র হইতে পারেন নাই। তিনি ধনীর গৃহে বিবাহ করিয়াছিলেন এবং তাঁহার পত্নী নিরুপমা দেবী পিতার ঐশ্বর্য্যের অহঙ্কারে, এবং শ্বশুরের জীবনকালে দুইটী পুত্রের জননী হইয়া কাহাকেও গ্রাহ্য করিতেন না; তবে শ্বশুর যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন বাধ্য হইয়া স্বামীর বিমাতাকে মানিয়া চলিতেন। হরবল্লভের চতুর্থ পুত্রের নাম যোগেশচন্দ্র, পিতার মৃত্যুর একবৎসর পূর্ব্বে তাঁহার বিবাহ হইয়াছিল। হেমচন্দ্রের মৃত্যুর পর হরবল্লভের পত্নী প্রায় দুই বৎসর কাল সংসারের কার্য্য দেখেন নাই। হেমচন্দ্রের পত্নী তখন সবে বিধবা হইয়াছেন, মধ্যমের পত্নী সন্তান-কামনায় দেবসেবা লইয়া ব্যস্ত থাকিতেন, সংসারের দিকে চাহিয়াও দেখিতেন না। কাজে কাজেই বাধ্য হইয়া সেজ-বৌকে সংসারের ভার লইতে হইল। কর্তৃত্ব বড় মধুর, যাঁহারা একবার ক্ষমতা হাতে পাইয়াছেন, তাঁহারা প্রায়ই তাহা ছাড়িতে পারেন না, বিশেষতঃ একবার গৃহিণী হইয়া পুনরায় ঘোমটার আড়ালে নববধূ সাজিতে পারা যায় না। সেজ-বৌত’ মানুষ বটে, তাহার ত’ রক্ত মাংসের দেহ, সেও পারিল না। হেমচন্দ্রের মৃত্যুর দুইবৎসর পরে শেফালিকা প্রসব করিতে পিত্রালয়ে আসিল, তখন হরবল্লভের পত্নী তাহাকে লইয়া ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন। ছয় মাসের পুত্র লইয়া কন্যা যখন শ্বশুরালয়ে চলিয়া গেল, তখন কার্য্যাভাবে হরবল্লভের পত্নী সংসারে মনোনিবেশ করিতে গিয়া দেখিলেন যে তাঁহার স্থান অপরে অধিকার করিয়াছে। সেজ-বৌ ছাড়িবার পাত্রী নহেন, তিনি বিনা যুদ্ধে সূচ্যগ্র পরিমাণ ভূমি ছাড়িয়া দিবেন না প্রতিজ্ঞা করিলেন; তখন হরবল্লভের পত্নী ভাবিয়া

৭২