গুচ্ছ।
রাগে গরগর করিয়া বকিতে বকিতে দ্রুতবেগে সেজ-বৌএর ঘরে প্রবেশ করিলেন।
মেজ-বৌকে দেখিয়া বামা পিসির পলায়নের একটু বিশেষ কারণ ছিল, বড়-বধূর পিত্রালয়ের দরুণ তাহার সহিত বামা পিসির একটু সম্পর্ক ছিল। একদিন সন্ধ্যার পর বামা পিসি যখন বড়-বধূর ঘর হইতে বাহির হইতেছেন, তখন মেজ-বৌ, তাহাকে, নারায়ণের শীতলের জন্য কলিকাতা হইতে আনীত পঁচিশটি ল্যাংড়া আমের সহিত গ্রেপ্তার করিয়া ফেলিয়াছিল, তদবধি বামা পিসির ন্যায় জাঁহাবাজ্ মেয়েও মেজ-বধূকে দেখিয়া শিহরিয়া উঠিত।
মেজ-বৌ আসিয়া শাশুড়ীর হাত ধরিয়া উঠাইল, দেখিল ঘামে শাশুড়ীর সর্বাঙ্গ ভিজিয়া গিয়াছে, আর চোখ্ দিয়া ঝর ঝর করিয়া জল পড়িতেছে। হরবল্লভের স্ত্রী মেজ-বৌএর সাহায্যে শয়নকক্ষে যাইয়া শয্যাগ্রহণ করিলেন, মেজ-বৌ অনেক সাধ্যসাধনা করিয়াও কোন কথা জানিতে পারিল না। হতাশ হইয়া যখন ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিল, তখন সেজ-বৌএর ঘর হইতে উচ্চহাস্যধ্বনিত উঠিয়া মুখোপাধ্যায়দিগের চক্ মিলান দালানে প্রতিধ্বনিত হইতেছিল। মেজ-বৌ বুঝিল ইহা সেজবৌএর বিজয়-দুন্দুভির নিনাদ।
সন্ধ্যাকালে মেজ-বৌ বিস্মিত হইয়া দেখিল যে, বামা ঠাকুরঝির ভোজনের জন্য রান্নাঘরে বিরাট আয়োজন হইয়াছে। কোন কথা না বলিয়া মেজ-বৌ ধীরে ধীরে শয়নঘরে প্রবেশ করিয়া অর্গল বন্ধ করিয়া দিল, সংসারে তাহার কোনই অধিকার ছিল না, কারণ তাহার স্বামী তাহার কোন কথায় কর্ণপাত করিতেন না।