পরিবর্ত্তন।
“মা, ওমা, ওঠ না মা, তোমার পায়ে পড়ি, ওঠ না মা, বেলা যে এক প্রহর হতে চোল্লো, ওঠ না মা, তুমি না উঠ্লে যে ঠাকুর ঘরে যেতে পার্ছি না।”
দ্বাদশীর দিন প্রভাতে সিক্তবস্ত্রে মেজ-বৌ শাশুড়ীর শয়নকক্ষের দ্বারে দাঁড়াইয়া ধীরে ধীরে ডাকিতেছে। ছোট-বধূ পার্শ্বে দাঁড়াইয়া আছে। বৈশাখের বেলা, তখন রৌদ্র বেশ ফুটিয়া উঠিয়াছে, দারুণ উত্তাপে আকাশে সীসার রং ধরিয়াছে। পূজার ঘরের সম্মুখে পুরোহিত আসিয়া আশ্চর্য্য হইয়া দাঁড়াইয়া আছেন। দেখিতেছেন যে, শিবমন্দির ও নারায়ণের গৃহ তখনও পরিস্কৃত হয় নাই। পুরোহিত তাঁহার জীবনে কখনও এরূপ বিশৃঙ্খলা দেখেন নাই। সেজ-বৌ ও বড়-বৌ ব্যস্ত হইয়া সমস্ত অন্দরময় ছুটাছুটি করিয়া বেড়াইতেছে, কিন্তু ঠাকুরঘরের দিকে চাহিয়াও দেখিতেছে না। এমন সময় একখানা বড় গাড়ী আসিয়া অন্দরের দেউড়িতে দাঁড়াইল, কে যেন নামিয়া আসিয়া করুণ বামাকণ্ঠে ডাকিল “মা”। কণ্ঠস্বর শুনিয়া মেজ-বৌ, ছোট-বৌ কে বলিল “ছোট-বৌ, তুই শীগ্গির নেমে যা, শিউলি এসেছে, তাকে তোর ঘরে নিয়ে যা, আমি ততক্ষণ মাকে বার করছি।” তাহার পর দরজায় খুব জোরে ধাক্কা দিয়া, জোরে বলিয়া উঠিল “ওমা, শিউলি এসেছে মা, শীগ্গির দোর খোল, ওর সাম্নে আমাদের মুখ আর পুড়িও না।” রুদ্ধ দ্বার তথাপিও মুক্ত হইল না।
শেফালিকা ননদ সঙ্গে করিয়া দেবরের বিবাহ উপলক্ষে পিত্রালয়ে নিমন্ত্রণ করিতে আসিয়াছিল। তাহার পুত্রটি আসিয়া বাড়ীময় মাতামহীকে খুঁজিয়া বেড়াইতেছিল। মাতামহীকে কোথাও না পাইয়া শয়ন-