পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরিবর্ত্তন।

হরবল্লভের পত্নী অশ্রজলের সঙ্গে মিশাইয় অবশিষ্টটুকু বলিয়া দিলেন।

 ইত্যবসরে ছোট-বৌ শেফালিকার ননদকে লইয়া সেজ-বৌ এর ঘরে, যাইয়া দেখিল যে সে মুড়ি দিয়া বিছানায় গুইয়া আছে, আর বড়-বৌ তাহার মাথা টিপিতেছে। ব্যাপার দেখিয়া ছোট-বৌ স্তম্ভিত হইয়া গেল, কারণ অর্দ্ধদও পূর্ব্বে সেজ-বৌ এর চীৎকারে বাড়ীতে কাক-কোকিল বসিতে পারিতেছিল না। সেজ-বৌ বাধ্য হইয়া শেফালিকার ননদকে অভ্যর্থনা করিল। ননদ শেফালিকাকে অনেকক্ষণ না দেখিয়া চঞ্চল হইতেছিল, কিন্তু ছোটবধূ তাহাকে সেখানে রাখিয়া পলায়ন করিয়াছিল।

 মাতার শয়নকক্ষে শেফালিকা মাতাকে বলিতেছিল “মা, তবে আর কিসের জন্য থাকা, তুমি আমার সঙ্গে চল।” মাতা উত্তর করিলেন “তাই যাব মা, স্বামীর সংসার ব’লে তাই এতদিন পড়েছিলাম, কিন্তু এখন দেখছি আমাকে না তাড়ালে এরা তিষ্ঠিতে পারবে না। আমি স্বামীপুত্রহীন, এদের সংসারে আর আমার কোন প্রয়োজন নাই।” মেজ-বৌ স্থির হইয়া বসিয়াছিল, মাঝে মাঝে চম্‌কিয়া উঠিতেছিল, সে হঠাৎ বলিয়া উঠিল “মা তুমি কি সত্যসত্যই আমাদের ছেড়ে যাবে?” তাহার কথা শুনিয়া হরবল্লভের পত্নীর চক্ষু আবার জলে ভরিয়া আসিল, “আমি না গেলে তোদের সংসারে শান্তি আসবে না মা। তাঁর সঙ্গে আমার দিনও ফুরাইয়াছে, তোমাদের হাতে ক’রে মানুষ করিছি, এখন তোমরা নিজের সংসার বুঝে সুঝে নাও।” মেজ-বৌ শাশুড়ীর পা জড়াইয়া কাঁদিয়া পড়িল, বলিল “তুমি যেও না মা, তোমায় ছেড়ে আমি থাকতে পারব না,

৭৭