পাতা:গৃহপ্রবেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মাসি

 আজ এমন কথা হঠাৎ কেন বলছিস যতীন। স্বপ্নের ঘোরে এককথা আর হয়ে তোর কানে পৌঁচেছিল নাকি।

যতীন

 না না, অনেকক্ষণ ধরে ভাবছিলুম, ঝাউগাছের ঝরঝর শব্দ, নদীতে জোয়ার, দূরে বউ-কথা-কও পাখির ডাক। মনে পড়ছিল, মণির সেই কুসমিরঙের শাড়ি, আর কুকুরের সঙ্গে খেলা, আর বিনা-কারণে হাসি। ওর দুরম্ভ প্রাণ, এই মরা দেওয়ালগুলোর মধ্যে কেন। দাও ছুটি ওকে। কতদিন এ বাড়িতে ওর হাসিই শুনতে পাই নি। ওর স্রোতে নবীন জোয়ার, সে কি ঐ-সব ওষুধের শিশি, আর রুগীর পথ্যের বাঁধ বেঁধে আটকে দেবে। আমার মনে হচ্ছে, অন্যায়— ভারি অন্যায়।,

মাসি

 কিচ্ছু অন্যায় না, একটুও অন্যায় না। যার প্রাণ আছে সেই তো প্রাণ দিতে পারে। বর্ষণ তো ভরা মেঘের। উঠে বসিস নে যতীন, শো— অমন ছটফট করতে নেই। কোথায় মণিকে পাঠাতে চাস, বল্, আমি বুঝতে পারছি নে।

৪৯