পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৩৮
গোপীচন্দ্রের সন্ন্যাস

যত পুরুষ দেখ নারীর বেগার খেটে মরে।
সহস্র কৌটা রত্ন হয় অতি মহারস।
সে ধন ফুরাইলে পুরুষ নারীর হয় বশ॥
সিংহের আকার নারীর বাঘের মত চায়।
হাড় মাংস থুয়া বাছা মহারস লয়॥
পুরুষের ধন লয় স্ত্রী বেপার করে।
লোভেতে থাকিয়া পুরুষ বেগার খাটে মরে॥
আপনার হাল গরু বেগানার ভুঁয়ে চাস।
আব্বলের ক্ষয় আর বেছোনের সর্ব্বনাশ॥
লোহা দিয়া বান্ধে লাঙ্গল মাটিতে যায় ক্ষয়।
থোর কলা বাদুলে খাইলে কলা ডাঙ্গর লয়।
কাঁচা বাঁশে ঘুন লাগিলে কত ভার[১] সয়।
মূল খুঁটিতে ঘুন লাগিলে ঘর পড়িবার চায়॥
বন্ধন ছুটিলে ঘরের নাহিক উপায়।
ছাঁটনেতে ঘুন লাগিলে ঘর পড়ে যায়॥
“আট হাত বৃক্ষ বাছা যোড়ামুটি ফল।
নজরের পাপ কারণ সংসার ব্যকুল॥
পুরুষের ভক্ষণ নয় খাইতে না জুয়ায়।
সেই ধন ফুরাইলে পুরুষ যমঘরে যায়।
আধার[২] ভুঞ্জিলে বাছা ভাণ্ড হয় খালি।
দিনে দিনে রসাতল পুরুষের গাবুরালী॥
এ সুখ সম্পদ বাছা থাকিবে পড়িয়া।
আর আসিবে যমের দূত লইবে বান্ধিয়া॥
ইষ্ট মিত্র ভাই বন্ধু কান্দিবে বেড়িয়া।
বুকে বাঁশ দিয়া বাছা ফেলিবে বান্ধিয়া॥
সুস্থির হইলে কান্দিবে দিন দুই চারি।
অন্ন জল খাইলে বাছা যাইবে পাসরি।


  1. আদর্শে ‘বার’।
  2. ‘আন্ধার’।