পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোপীচন্দ্রের সন্ন্যাস
৪৮১

পবনের পুত্র হনু, পাথরের প্রায় তনু,
বল যার অপূর্ব্ব অপার।
যত গাছ ছিল বড়া, পদাঘাতে কৈল গুঁড়া,
দন্তে বন করে পরিষ্কার॥
ঝোপ ঝাপ সব মারি, অতি স্থান নির্ম্মল করি,
বিদায় হইল হনুমান।
হৃদয়েতে জপি নাম, সাধিয়া হাড়ির কাম,
নিজ স্থানে করিল গমন॥
এথা হাড়ি জলন্ধর, মনেতে জপে শঙ্কর,
সেবে হাড়ি ইন্দ্রের অপ্সরী।
ডাহিনে চন্দন বাটা, বাম করে সুবর্ণ ঝাটা,
আইলেন এক বিদ্যাধরী॥
পরনে পাটের সাড়ি, আগে দিল ছড়া ঝাড়ি,
আমোদিত করিল চন্দনে।
হাতেতে তৈলের খুরি, দীপ জ্বলে সারি সারি,
আইল সব নাচনীর বেশে।
চাঁচর মাথার চুলে, কবরী জাতি ফুলে,
ভ্রমর গুঞ্জরে কেশপাশে।
সীমন্তে সিন্দুরের ফোটা, নয়নে কাজলের ঘটা,
কর্ণে ফুল দিছে কর্ণপুর।
অধর অরুণ আভা মুখে যেন চন্দ্র শোভা,
দন্ত গুলি যেন মোতিচূর॥
নাসিকা মোহন বাঁশী, যেন পূর্ণিমার শশী,
কর্পূর তাম্বল শোভা করে।
বুকে কুচু পদ্মকলি, মধুমর্ম্ম জানে অলি,
মধুলোভে শব্দ করি ফিরে॥
গলায় মালতী মালে, রত্ন প্রবাল জ্বলে,
যেন শশী তারাগণ মাঝে।