পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৯২
গোপীচন্দ্রের সন্ন্যাস

ব্রহ্মজ্ঞানী কহিতেছে যোগের কাহিনী।
জল আনা বিস্মরিল ব্রহ্মজ্ঞান শুনি॥
জ্ঞান কৈয়া ব্রহ্মজ্ঞানী যায় রাজপথে।
ব্রহ্মজ্ঞান শুনিয়া রাজা বৈরাগী হৈল চিতে॥
যোগ ব্রহ্ম শুনে রাজা সরোবরকূলে[১]
দৈবনির্ব্বন্ধ রাজার দুঃখ কপালে॥
এথা সুলোচনী বেশ্যা ভুঞ্জিয়া শৃঙ্গার।
জল বিনে না পারিল স্নান করিবার॥
গোস্বায় জ্বলিল বেশ্যা যেন হুভাশন।
কাঞ্চনী দাসীর তরে ডাকে ঘনেঘন॥
বেশ্যার নিকটে যখন কাঞ্চনী আইল।
কাঞ্চনীর তরে বেশ্যা কহিতে লাগিল॥
বেশ্যা বলেন দাসী বাটার পান খাও।
জল আনা নকরকে বান্ধিয়া ফেলাও॥
মধ্য উঠানেতে বেটাক চিত করিয়া।
বাইশ মণ পাথর দিবে বুকেতে তুলিয়া॥
এতেক কহিতে রাজা জল লয়ে আইল।
ভার নামাইতে রাজাক চৌমুড়া বান্ধিল॥
কাঞ্চনার সাতে আর দাস শত জন।
রাজাকে করিল সবে বিপত্য বন্ধন॥
মধ্য উঠানেতে রাজাক চিত করিয়া।
বাইশ মণ পাথর বুকেতে তুলিয়া॥
দ্বিতীয় প্রহর বেলা বসন্তের খরা।
তাহাতে রাজার বুকে পাথরের ভরা॥
যাহার শরীরে সয় না এক পুষ্পের ভর।
বাইশ মণ পাথর তার বুকের উপর॥

  1. ‘সরোবর কোলে’।