পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোপীচন্দ্রের গান
কালো ধবল পাঠা ইত্যাদি—ডা° গীয়ারসনের সংগ্রহে ‘ধওলা পাঁঠা দেন বালু ছেদ করিয়া’।
ঘাটত ধরেয়া—ঘাটে রাখিয়া।
উখরিয়া—উৎপাটিত করিয়া, উন্মুলিত করিয়া; প্রা° উক্ খো ড়ি অ (স° উ ৎ√খো ট্ ক্ষেপণে)।
লাংটি—নাংটি শব্দেরই রূপভেদ।
এয়ার—ইহার শব্দের টীকা দ্রষ্টব্য।
ধর্ম্ম নিরঞ্জন—ভগবান্ বুদ্ধ। সোনা রায়েব গান প্রভৃতিতে ধর্ম্ম সেবার কথা আছে।
আঠার—প্রা° অ ট্ ঠা র হ; প্রাচ্য হি° অ ঠা র হ, গু° অ ঢা র।
ফেলাইল—প্রাচীন বাঙ্গালায় পে লা ই ল; প্রা° √পেল্ল ক্ষেপণে।
টুটিয়া—√টু ট্‌ ভঙ্গে (স° ত্রু ট)।

পৃষ্ঠা ৮

রভিশাপ—অভিশাপ। উত্তর বঙ্গের প্রাদেশিক।
ফের—প্রা° পু ণো (স° পূ ন র); প্রাচ্য হি° ফি ন্।
এজরি কাড়াল—একাজ্বরি হইল, অবিবাম জ্বরের উদয় হইল। কাড়াল—বা° √কাচ্ কর্ষণে।
বিধাতা—যম অর্থে প্রযুক্ত।
তলপ চিঠি—পরোয়ানা। আ° ত্ব ল ব্ এবং হি° চি ট্ ঠী।
গোদা—(বুড়া বা সর্দ্দার) যম-দূত। গো দ শব্দের উত্তর অন্ত্যর্থে আ’। যমের পায়েও গোদ।
নিগা—লও গিয়া।
জিউ—জীবন, জীবাত্মা। প্রা° অপ° জী উ।
আনেক—আন, লইয়া আইস।
সমুদ্র শুকাইল—ধাতু ক্ষীণ হইল।
পিছা—প্রা° প চ্ছা। (পশ্চাৎ)।
পালঙ্কে ঢলিল—বিছানা লইল; পালঙ্ক— প্রা° প ল্ল ঙ্ক (পর্য্যঙ্ক) ম° প ল ঙ্গ।
জম—প্রা° রূপ।
সাও— শাপ।
কাহিলা পড়িল—দুর্ব্বল হইয়া পড়িল। আ° কা হি ল, (অলস, নিস্তেজ) স° কা হ ল (শুদ্ধ) শব্দ তুল°।
পানি—পানীয়, জল। Specialization of meaning; এখন অপেয় দুর্গন্ধ জলকেও পানি বলে। প্রা° পা ণি অ। বর্ত্তমানে শব্দটি হি°, ম°, গু° প্রভৃতি ভাষায় সুপ্রতিষ্ঠিত, বাঙ্গালায় অনাদৃত।
গুরু ছাড়িল—চৈতন্য হারাইল, gave up the ghost i.e. lost the power of sensation।
চিত্রগোবিন্দ—চিত্রগুপ্ত চতুর্দ্দশ যমের অন্যতম।
দফ্‌তর নাগাইল পাইল—খাতাপত্রে বা হিসাবের কাগজে দেখিল, দফ্‌তর—নেকড়ায় বাঁধা বই প্রভৃতি। আ°।
বেন্নামুখ—বিমুখ।
সমন—প্রা° স ম ণ (শমন)।
যমালয়—ঋগ্বেদ, ১ মণ্ডল, ৩৫ সূত্রে যমভবনের উল্লেখ দেখা যায়, যথা—‘দ্যুলোক প্রভৃতি তিনটী লোক আছে, দুইটী (দ্যুলোক ও ভূলোক) সূর্য্যের সমীপস্থ; একটী (অন্তরীক্ষ) যমের ভবনে গমনকারীদিগের পথ;[১] বিবস্বানের দ্বারা সরণ্যুর গর্ভে যম ও তাঁহার ভগ্নী যমীর জন্ম হয়। বিবস্বান সূর্য্য (বা আকাশ) এবং সরণ্যু শব্দে প্রভাত বা উষা। আচার্য্য Max Muller যমজ ভাই-বোন যম ও যমীকে দিবা ও রাত্রি বলিয়াছেন। পরে যম যেমন করিয়া মৃত্যুর রাজা হন, তাহারও আভাস দিয়াছেন। তাঁহার মতে প্রাচীন ঋষিগণ যেরূপ পূর্ব্বদিক্‌কে জীবনের উৎপত্তিস্থল মনে করিতেন, পশ্চিমদিককে সেইরূপ জীবনের অবসান ভাবিতেন। সূর্য্য পূর্ব্ব দিকে উদিত হইয়া পশ্চিমদিকে অন্তর্হিত হইতেন,
  1. ‘তিস্রো দ্যাবঃ সবিতুর্দ্বা উপস্থাঁ একা যমস্য ভুবনে বিরষাট।’