পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জন্ম খণ্ড
২৩
মুর্চ্ছল—নাকরা বা ডঙ্কা জাতীয় রাজ্যযন্ত্র, kettle. drums। স° ম র্দু ল তুল°।
বন্দূক—বহু পূর্ব্বকাল হইতে ভারতবর্ষে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রচলন ছিল। ধনুর্ব্বেদ, শুক্রনীতি, রামায়ণ, মহাভারতাদি গ্রন্থে শতঘ্নী (cannon), নালীকাস্ত্র প্রভৃতির উল্লেখ আছে। তুর্কীরা এদেশে বন্দুকের আমদানী করে। পুরান বন্দুকের ইংরাজি প্রতিশব্দ matchlock।
ধুরাধুরি—ধড়্ ধড়ানি অর্থাৎ আওয়াজ।
পুত—প্রা° পু ত্ত (পুত্র)।
দাইয়ানি—wet-nurse; দাই-আনি।

পৃষ্ঠা ৫০

রাম ত্যাল—শ্রীগোপাল তৈল, নারায়ণ তৈল, বিষ্ণু তৈলের সাদৃশ্যে।
গুআ খোআ বিশি--সুপারির আধার।
খঞ্চনি—শিরোভূষণ।
খোপা—কবরী, বেণী। ১২শ শতকের রূপ খো প্য ক; স° ক্ষুপ শব্দ তুল°।
নেউজ পাত—মাঝের পাতা, নবজাত পত্র; রাঢ়ে আঙ্গট পাতা। সোনারায়ের গানে ‘অখণ্ড কলার পাত’।
দোন—দুই। প্রা° দো ণি, দো ণ্ণি, দো ন্নি (দ্বৌ) ম° দো নো।

পৃষ্ঠা ৫১

কাখে—প্রা° ক ক্ খা; একার বিভক্তিচিহ্ন।
তিন দিন অন্তরে ইত্যাদি—তিন দিনে তিন কামান, চারি দিনে চতুর্থা, দশ দিনে দশা এবং ত্রিশ দিনে ক্রিয়া সুদু তথা জ্ঞান্তা-ভোজন ব্যাপারে প্রসূত নবকুমারের জাতকর্ম্মাদির সহিত মৃত রাজা মাণিকচক্রের শ্রাদ্ধাদি, ক্রিয়া যেন খানিকটা মিশাইয়া ফেলা হইয়াছে। অন্তরে--পরে, অন্তে।
কামান—প্রা° ক ম্ম ণ।
পন্দর—প্রা° প ণ্ণ র হ।
নাপিত—বৈদিক ভাষায় শব্দটি পাওয়া যায় না। পা° ন হা পি ত।

পৃষ্ঠা ৫২

ক্রিয়া সুদু হৈল—অশৌচান্ত হইল। ক্রিয়া শুদ্ধ হইতে ক্ষৌরকর্ম্ম।
রাজ্য করি খায় ইত্যাদি--অন্তঃপুরে থাকিয়া ময়না রাজ্য শাসন করিতে লাগিল।
নাম কলম রাখিল—নামকরণ করিল। হিন্দুস্থানীতে কলম-করনা অর্থে নির্দ্দেশ করা।
বছরেক—বাঙ্গালা সন্ধি।
সম্বলব—সমর্পণ।
সংকীর্ত্তন করিবার লাগিল—শ্রাদ্ধ-বাসরে সংকীর্ত্তন প্রথা।
মৎস্য পরশ করিল—আদ্য শ্রাদ্ধের পর কর্ম্মকর্ত্তার জ্ঞাতিদের সহিত পঙক্তিতে বসিয়া মাছ ভাত খাওয়া এদেশের লৌকিক আচার। ইহাকে সাধারণতঃ ‘নিয়ম-ভঙ্গ’ বলে। কিন্তু বিধবা ময়নামতীর মৎস্যস্পর্শ একটু বিচিত্র।
বাদে--পরে।
চারি কলমে রাজাক ইত্যাদি—চারি কথার অর্থাৎ অনায়াসে ও অল্প সময়ে রাজাকে লিখিতে পড়িতে শিখাইল। অথবা চারি শাস্ত্রে শিক্ষা দিল।
আজি কালী করিয়া ইত্যাদি——সাত বৎসর বয়সে রাজার নাম রাখা হইল। যজুর্ব্বেদী ব্রাহ্মণের একাদশ দিবসে এবং ক্ষত্রিয়াদি বর্ণের যথাক্রমে ত্রয়োদশ, ষোড়শ ও একত্রিশ দিনে নামকরণ বিহিত। কিন্তু এদেশে সাধারণতঃ অন্নপ্রাশনের কালেই নামকরণ হইয়া থাকে।
খেতুয়া লঙ্কেশ্বর—কুমিল্লার প্রাচীন নাম কমলাঙ্ক। কমলাঙ্ক সম্পর্কে খেতুয়া লঙ্কেশ্বর হইয়া থাকিবে।

পৃষ্ঠা ৫৩

মাই—মাগধী মা ই আ। প্রাচ্য হি° মা ঈ।
সেঞেরা—বিবাহের টোপর।
দরগুআ—বিবাহের কথাবার্ত্তা পাকা করিয়া প্রকাশ করা উপলক্ষে ওয়া-পান খাওয়ান।
বিবাহ সাজাইল—বিবাহ-সজ্জা করিল।