পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোপীচন্দ্রের পাঁচালী
৭৭
প্রচুর লালা নির্গত হয়। ঐ লালাই অভ্র। কবিকঙ্কণে ‘মেঘ ডম্বরু কাপড়’।
নেপুর—গুজরাটীতেও।
ঝামুর জুমুর—ধ্বন্যাত্মক শব্দ।
কাম সিন্দুর—উদ্দীপক সিন্দুর-বিন্দু। কৃ° কী°’এ ‘শিশত শোভএ তোর কাম সিন্দুর।’ (পৃ° ৬৮), বিজয় গুপ্তেব পদ্মাপুরাণে ‘আর এক আইও বলে আপন কপাল নিন্দ। কাম-সিন্দুর হয় লখাই কপাল ভরিয়া পিন্ধ॥’ (পৃ° ১৭৭)। হিন্দুসমাজে সধবা স্ত্রীলোকদিগের সীমন্তে সিন্দুর ধারণ একটি প্রাচীন প্রথা। গোভিলগৃহ্যসূত্র ও সংস্কার তত্ত্বাদিতে উহার উল্লেখ আছে। পতিব্রতা ভর্ভতার আয়ু ইচ্ছা করিলে সিন্দুর, করভূষণ প্রভৃতি কখন ত্যাগ করিবে না।

হরিদ্রাং কুমকুমঞ্চৈব সিন্দুরং কজ্জলং তথা।
কার্পাসকঞ্চ তাম্বুলং মাঙ্গল্যাভরণং শুভম্॥
কেশসংস্কার-কবরী করকর্ণ-বিভূষণম্।
ভর্ত্তুর্ আয়ুষ্যম ইচ্ছন্তী দরয়েন্ ন পতিব্রতা॥

—স্কন্দপুরাণ, কাশীখণ্ড, ৪ অধ্যায়।
 আবার বিধবার পক্ষে ঐ ঐ দ্রব্য-ধারণ বা উহার ব্যবহার নিষিদ্ধ।

ন ধত্তে দিব্যবস্ত্রঞ্চ গন্ধদ্রবং সুতৈলকন।
স্রজঞ্চ চন্দনঞ্চৈব শঙ্খ-সিন্দূর-ভূষণম॥

—ব্রহ্মবৈবর্ত্ত, শ্রীকৃষ্ণজন্মখণ্ড, ৮৩ অধ্যায়।

পৃষ্ঠা ৩৩৫

জোড় মন্দির ঘর—পূর্ব্বে ‘জোড় বাঙ্গালা’ (পৃ° ৬৭, ২৪৯, ২৫২)।
রূপ রঙ্গ—রূপের লীলাবৈচিত্র বা সুরতশোভা।
দয়ার বন্ধু—সোহাগের স্বামী।
তোমার আমার—আমাদের তোমায়।
তার—তারে, তাহাকে।
প্রভু নিরঞ্জন—‘নিরঞ্জন’ শব্দ বৌদ্ধ ত্রিরত্নের অন্যতম ধর্ম্মের তথা শিবেরও দ্যোতক।
আহে—সম্ভাষণে।
পরাণি—প্রাণ, জীবন; বিপ্রকর্ষ।
চরা করে—বিচরণ করে, ঘাস খায়।
হরিণা—প্রা° হ রি ণ অ।
পাসরএ—প্রা° প স্ স র ই (প্রস্মরতি)।
সেই পশুর বুদ্ধি ইত্যাদি—তুমি রাজা, কিন্তু তোমার পশুর ন্যায় বুদ্ধিও নাই। ভর্ৎসনা।
এতবারে—পুনঃ পুন।
আঠার বৎসর হল ইত্যাদি—এখানে রাজা ও রাণীদের মধ্যে বয়সের ব্যবধান ছয় বৎসর; কিন্তু ‘তুমি সাত আমি পাচ’ ইত্যাদি চরণে মাত্র দুই বৎসরের তফাৎ হয়।
বিমশিল—বিচার করিল, চিন্তা করিল।

পৃষ্ঠা ৩৩৬

অদুনাএ বোলে বৈন গ ইত্যাদি—ভগিনি পদুনা সুন্দরি, ভাবনা কি? আমি কম বুদ্ধিমতী নহি। কায়স্থ জাতি বুদ্ধিজীবী বলিয়া প্রসিদ্ধ, কিন্তু তুলনায় তাহাদের প্রতিভাও আমার নিকট হারি মানে।
অদুনাএ—nom. sing, মাগধী ‘ইদেৎসৌ’; বাঙ্গালায় আকারান্ত শব্দেও প্রযুক্ত হয়। সুন্দর—বিশেষ্য-পদ, স্ত্রী-প্রত্যয়ের অভাব। সুন্দরী রমণী। সাত অঙ্কের বিশিষ্টতা লক্ষণীয়: ‘সাত রাজার ধন এক মাণিক’, ‘সাতেও হুঁ পাঁচেও হুঁ’, ‘সাতেও নাই পাঁচেও নাই’, ‘সাত নকলে আসল খাস্ত', ‘সাত চড়ে রা নাই’, ‘সাত সমুদ্র তের নদী', ‘সাত পাঁচ’, ‘সাত সতের', ‘সাত কাণ্ড', ইত্যাদি। কাইত—ধর্ম্মশাস্ত্র ও পুরাণে