পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪

 অনেক গ্রন্থের মতেই সিদ্ধাদিগের মধ্যে গোরক্ষনাথ মীননাথের শিষ্য, হাড়িপা গোরক্ষনাথেরশিষ্য, কানুপা হাড়িপার শিষ্য। ইঁহাদের সকলের এক সময়ে জন্মও গোরক্ষবিজয় বা মীনচেতন গ্রন্থে বর্ণিত হইয়াছে। মুন্সী আবদুল করিম সম্পাদিত গোরক্ষবিজয় কাব্যে পাই—

বদনে জন্মিল শিব জোগিরূপ ধরি।
সিরেত উত্তম জটা শ্রবণেত কোড়ি॥
নাভিতে জর্ম্মিল মীন গুরু ধনন্ত্বরি।
সাক্ষাতে সিদ্ধার ভেস অনন্ত মুরারি॥
হাড়িফার জন্ম হইল হাড় হোতে।
সর্ব্ব অঙ্গে সিদ্ধার ভেস দেখিএ সাক্ষাতে॥ (পৃঃ ৬-৭)

কথিত আছে একবার দুর্গাদেবী সিদ্ধাদিগের মন পরীক্ষার জন্য তাঁহাদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া স্বয়ং ভুবনমোহিনী বেশে পরিবেশন করেন। তাঁহার রূপ লাবণ্যে সকলেরই (কোন মতে গোরক্ষনাথ ব্যতীত আর সকলের) মন টলিল। ফলে দেবী তাঁহাদিগকে অভিশাপ দিলেন। গোরক্ষবিজয় গ্রন্থে পাই—

তবে মনে চিন্তিলেক হাড়িফা সিধাই।
এমন সোন্দরি তবে আহ্মি যদি পাই॥
হাড়ি কর্ম্ম করি যদি থাকি তার পাশ।
পাইতে সোন্দরি মোর মনে হাবিলাস॥
হাসিয়া বোলেন দেবী পাইলে এহি বর।
হাড়িরূপ ধরি জাও মনামতি ঘর॥
হাতে ঝাড়ু লও (তুহ্মি) কাঁধেতো কোদাল।
চলহ আহ্মার আঙ্গাএ বর পাইলা ভাল॥ (পুঃ ১৯-২০)।

পাদটীকায় পাঠান্তরে পাই—

হাতে ঝাটা লও তুমি কান্ধেত কোদাল।
মেহারকুলেতে চল বর পাইলা ভাল॥

ইহার পর এক স্থানে কানুফাকে গোরক্ষ নাথ বলিতেছেন—

তোর গুরু বন্দী হইছে মেহারকুল দেশ।
নিশ্চয় জানম মই তাহার উদ্দেশ॥