পাতা:গোপীচন্দ্র (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫১

প্রথম পুরুষ

(সংস্কৃত উত্তম পুরুষ)

(আমি ধরিলাম =) হামরা ধর্‌চি

(আমরা ধরিয়াছি =) মুঞি ধর্‌চুঁ

(আমি ধরিয়াছিলাম =) মুঞি ধরচুনু

(আমরা ধরিয়াছিলাম =) হামরা ধর্‌চুনু

(আমি ধরিব =) মুঞি ধরিম
(আমরা ধরিব=) হামরা ধইরম

দ্বিতীয় পুরুষ

(সং মধ্যম পুরুষ)

তোমরা ধৈর্‌ছেন বা ধৈল্লেন


তোমরা ধৈর্‌ছেন

তুই ধর চুলু

তোমরা ধর্‌ছিলেন


তুই ধরবু

তৃতীয় পুরুষ

(সং প্রথম পুরুষ)

তারা ধৈর ছে ছে বা ধৈল্লে

তাঁয় ধৈরে

তাঁয় ধৈর ছে

তাঁয় ধৈর্‌ছে বা ধর্‌ছিল


তাঁয় ধৈর্‌বে
তারা ধৈরবে

পাঠক এই গ্রন্থে প্রকাশিত গাথায় অনেক স্থলেই এইরূপ ক্রিয়াপদের ব্যবহার দেখিতে পাইবেন। অন্যত্র সংগৃহীত গানেও ভাষার বিশেষত্ব লক্ষিত হইবে। কারণ—কতকটা প্রাদেশিকতা, কতকটা গানের প্রাচীনতা।

 গ্রন্থে আধুনিক সমাজ হইতে বিভিন্নতাসূচক যে সকল সামাজিক প্রথার উল্লেখ দেখা যায় তাহার কতকটা সঙ্গীত-রচয়িতার সমসাময়িক অবস্থা, কিন্তু যে প্রাচীন গীতি সকলের মূল তাহা হইতেও প্রকৃত তথ্য গৃহীত হয় নাই একথা বলা যাইতে পারে না। অদুনার বিবাহে পদুনাকে যৌতুক স্বরূপ দানের উল্লেখ সকল গানেই আছে, বিবরণটা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ও প্রাচীন গাথার অন্তর্ভুক্ত মনে করিলে কিছুমাত্র অন্যায় হইবে না। অপেক্ষাকৃত আধুনিক সময়েও বৈষ্ণব-প্রবর নিত্যানন্দ কত্তৃক জাহ্নবী দেবীকে যৌতুকে গ্রহণ দেখিতে পাওয়া যায়। যে সময়ের ঘটনা লইয়া এই গাথা বা গানগুলি লিখিত তখন বঙ্গদেশে বৌদ্ধ মতের প্রভাব। সামাজিক ব্যবস্থা ঠিক হিন্দুধর্ম্মের অনুযায়ী না হইলেও বিস্ময়ের কারণ নাই। বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও সতীদাহ বহুকাল হইতেই এ দেশে প্রচলিত। রংপুরের গাথায় ও ভবানীদাসের গ্রন্থে বিধবাবিবাহ প্রথারও উল্লেখ দেখা যায়। একদিকে যেমন আমরা অদুনা ও পদুনার পাতিব্রত্য-ধর্ম্মের উজ্জ্বল আলেখ্য দেখিতে পাই, অপর দিকে তারা