গোবিন্দ দাসের করচা এইরূপে কিছুদিন থাকিয়া পুরীতে। নিত্য নব নব মুখ লাগিল্প ভূঞ্জিতে ॥ অবধৌত কৃষ্ণদাস আর হরিদাস । পরম আনন্দ ভুঞ্জে থাকি প্রভুর পাশ ॥ নামের ধ্বনিতে পুরী পূর্ণ অাট পর * । গড়াগড়ি দেয় সবে ভূমির উপর ॥ কেহ মালা গাথে কেহ ঘর্ষয়ে চনদন । কেহ কেহ করয়ে ভোগের আয়োজন ॥ ক্রমে সব সাঙ্গোপাঙ্গ মিলিল অগসিয়া । হইল পুরীর শোভা বৈকুণ্ঠ জিনিয়া ॥ বিপ্র কৃষ্ণদাস আর ভুড়ে শ্যামদাস । দুইজনা রক্ষা করে প্রভুর দুই পাশ ৷ কখন আছাড় খায় প্রেমেতে মাতিয়া । কখন বু। সমুদ্রেতে পড়ে ঝম্প দিয়া ॥ প্রেমদাস গোপীদাস মোহান্ত ব্রাহ্মণ । ভাগবত পাঠে করে অমৃত বর্ষণ ॥ রঘুনাথ দাস আর আচাৰ্য্য শেখর। দামোদর নরহরি অণর গদাধর ॥ নিত্য নিত্য সবে মিলি যান শ্রীমন্দিরে । আমার প্রভূরে সবে লয়ে যান ঘিরে ॥ মধুর মৃদঙ্গ বাজে কণ্ডু করতাল । নামে মত্ত সদা তার নাহি কালাকাল ॥ এইরূপে প্ৰভু মোর মিশ্রের ভবনে । আনন্দ করেন সদা ভক্তগণ সনে ॥ কাণীমিশ্র নিত্য আনে প্রসাদ প্রচুর । সুগন্ধে হৃদয় স্তরে থাইতে মধুর। নানাবিধ ভাজাপোড়া কতই কহিব । কতই প্রসাদ আর উদরে পূরিব ॥ চানাভাজা চুরমারি মুদগ কলাই । তিল তিষি গম যব বলিহারি যাই ॥
- অটপর = অষ্ট প্রহর ।
কত শত ফল মূল নারিকেল কোরা। নিত্য হাতে তুলি দেন নদিয়ার গোর ॥ চিনাচুর পরমার লাড, আর গজ । আঁধসা পিষ্টক পুলি রসপুর গজ । ঘৃতসিক্ত অন্ন ভূতঘণ্ট বেতো শাক । এ সব প্রসাদ পেয়ে নাহি সরে বাক ॥ অবাক হইয়া নিত্য পেট ভরে খাই । তখনি উদরসাৎ যখন যা পাই ॥ এইরূপে যত দিন যাইতে লাগিল । ক্রমে সব ভক্তগণ আসিতে লাগিল ॥ শঙ্কর ভারতী আর পরানন্দপুরী । দামোদর স্বামী প্রতোম ব্রহ্মচারী ॥ চিদানন্দগিরি প্রেমানন্দ সরস্বতী । প্রভূর নিকটে নিত্য করে গঙ্গগতি ॥ বহু ভক্ত একত্র হইরা নীলাচলে । ভজন করেন সবে অতি কুতূহলে ॥ এই কালে সাৰ্ব্বভৌম আদি দেখা দিল। সেই সঙ্গে বহু ভক্ত আসিয়া মিলিল ॥ মহাবিষ্ণু দেখিয়া প্রভুর হৈলা রতি। পুনঃ খুনং করে প্রভু ভকতি প্ৰণতি ॥ মুরছিত হৈল প্রভু গোবিন্দ দেখিয়া । যেন মৃতদেহ তথি রহিল পড়িয়া ॥ সাৰ্ব্বভৌম ভট্টাচাৰ্য্য ছিল সেই স্থানে । কোলে তুলি লয়ে গেলা আপন ভবনে ॥ কত সেবা করিলেন প্রভূরে লইয়া । সাৰ্ব্বভৌমের ভক্তিরস পড়ে উছলিয়া । অনস্তর রাব্বভৌমে ভক্তি করি দান । দক্ষিণযাত্রার লাগি হৈল আগুয়ান ॥ তিন মাস কাল মোর চৈতন্ত্য গোসাই । পরীতে কহিলা সঙ্গে করিয়া নিতাই ॥