গোবিন্দ দাসের করচা চরণে দ্বলেন তারে নাহি বাহ্যজ্ঞান । হরি বলে বাহতুলে নাচে আওয়ানু ॥ সত্যরে বাহতে ছাদি বলে বল হরি। হরি বল প্ৰাণেশ্বর মুকুন মুরারি। কোথা প্রভূ কোথায় বা মুকুন্দ মুরারি। অজ্ঞান হইলা সবে এই ভাব হেরি ॥ হরি নামে মত্ত প্রভু নাহি বাহা জ্ঞান। ঘাড়ি ভেঙ্গে পড়িতেছে আকুল পরাণ ॥ মুখে লালা অঙ্গে ধুলা নাহিক বসন। কটিকিত কলেবর মুদিত নয়ন ॥ ভাব দেখি যত বৌদ্ধ বলে হরি হরি। শুনিয়া গোরার চক্ষে বহে অশ্রুবারি ॥ পিচকিরি সম অশ্র বহিতে লাগিল । * ইহা দেখি তীর্থরাম কাদিয়া উঠিল । বড়ই পাষও মুহি বলে তীর্থরাম। কৃপা করি দেহ মোরে প্রভু হরি নাম ॥ তীর্থরাম পাষণ্ডেরে করি আলিঙ্গন। প্রভু বলে তীর্থরাম তুমি সাধুজন। পবিত্র হইনু আমি পরশি তোমারে। “তুমি ত প্রধান ভক্ত কহে বারে বারে । তীর্থরাম ধনী তবে চরণে পড়িয়া । আকুল হইল কত কান্দিয়া কান্দিয়া ॥ কান্দিতে কানিতে যবে ভক্তি উপজিল । অমনি ধরিয়া হাত প্ৰভু আলিঙ্গিল । প্রভু কহে তৃণসম গণহ বৈভবে। ভক্তিধন অমূল্য রতন পাবে তবে ॥ দূরেতে নিক্ষেপ কর বসন ভূষণ । ছাড়িয়া অনিত্য ধনে ভজ নিত্য ধন ॥
- "পিচকারির ধারা যেন অশ্রু নয়নে" (চৈ,
চ। ১১ শ পঃ ১১১, মধ্য )। ૨: বার বার যাতায়াতে পাইবে যন্ত্রণা। নিষ্কাম জনের হয় এই ত মন্ত্রণ ॥ এই যে সাধের দেহ ঢাকা চৰ্ম্ম দিয়া । কিছুদিন পরে ইহা যাইবে পচিয় ॥ দেহ হতে প্রাণ পাখী উডে যাবে যবে। “হয় কীট নয় ভস্ম নয় বিষ্ঠা হবে.॥ গৌরবের ধন কিছু নাহি ত্রিভুবনে । কেবল গোঁবব আছে ঈশ্বর ভজনে। বিলাস বৈভব সব অনিত্য জানিয়া । একে একে ফেলে দাও দুরেতে টানিয়া । ঈশ্বরের বিশ্বাস ঈশ্বর আনিয়া মিলায়। আর কিছু প্রমাণ ত কহেন না যায়। অসংখ্য জগৎ হয় প্রমাণের ঠাই। প্রমাণ নাহিক চাহে পণ্ডিত গোসাই ॥ নাহি প্রয়োজন বহু বাদ বিতাওয় । কৃষ্ণ আনি সাধকের বিশ্বাসে মিলায় ॥ বহুশাস্ত্র আলাপনে কিবা প্রয়োজন । বিশ্বাস করিয়া কৃষ্ণ করহ ভজন ॥ অর্থের গৌরব ধেই করে বার বার । দিন দিন তার দুঃখ হয় অনিবার ॥ সন্ত্রম লাগিয়া করে গৌরব যে জন । বল তার দুঃখ কেবা করে নিবারণ ॥ এ আমার আমি তার সবে এই কয় । মুদিলে নয়ন দুটি কেহ কার নয় ॥ মিছামিছি আত্মীয়তা করে সব লোক । ভাঙ্গা পুতুলের স্তায় মৃতদেহে শোক । পুত্র হয় পিতার আত্মজ সবে জানে। দুই চিত্ত এক বলি বেদে না বাখানে ॥ ছাড়িলে পুত্রের দেহ তাহার জীবন। তাহে নাহি সিদ্ধ হয় পিতার মরণ ॥ জননীর দেহ হতে পুত্র জন্ম লয়। কিন্তু দুহে এক নহে জানিহ নিশ্চয় ॥