२७ গোবিন্দ দাসের করচা কেহ কারু নহে এই প্রমেয়ের ধারা। না হয় করিতে সিদ্ধ প্রমাণের দ্বার ॥ ঈশ্বর প্রমেয় হন তাহার প্রমাণ । মনুষ্য হৃদয় মাঝে আছে ৰিদ্যমান ॥ দূর হতে দূরে তিনি মুঢ়জনে জানে। অত্যন্ত নিকটে তেহ জ্ঞানী ইহ মানে ॥ সার তত্ত্ব কহিলাম বেদের বাখান । মূৰ্খলোকে ইহার না রাখয়ে সন্ধান ॥ এই সব সত্য তত্ত্ব জানে যেই জন । পুনঃ পুনঃ সে জনার না হয় মরণ ॥ প্রভুমুখে এহ সব শুনি তীর্থরাম। বিষয়ে আসক্তি ছাড়ি করে, হরিনাম ॥ হরি সংকীৰ্ত্তনে প্ৰভু মাতিয়া উঠিল । ক্রমে তার সঙ্গিগণ আসিয়া জুটিল । ধনিজন তীর্থরাম পড়িলা বিপাকে । ইহা বলি পাষণ্ডের কত কথা তাকে ॥ তীর্থরাম তৃণসম বিষম ছাড়িয়া । হরি বলি নাচে দুই বাহু পশারিয়া ॥ সৰ্ব্বাঙ্গে তিলক ধরে পরণে কৌপীন। ভক্তিতে করিলা তারে অতি দীন হীন ॥ এই কথা কাণে শুনি তাহার রমণী। কাদিতে কঁাদিতে ধেয়ে আইল অমনি ॥ তীর্থের চরণ ধরি কাদিতে লাগিল । তীর্থরাম তার কথা কাণে না শুনিল ॥ কমল কুমারী নাম বড়ই সুন্দরী । তার রূপে চারিদিক দিলা আল করি ॥ কমলে বলিলা তীর্থ কর ধরি করে। বিষয় সম্পত্তি সব দিলাম তোমারে ॥ নরক হইতে ত্রাণ পাইয়াছি আমি । বিষয় বৈভব সব ভৈাগ কর তুমি ॥ এই কথা কাণে শুনি কমলকুমারী । আছাড় খাইয়া পড়ে পৃথিবী উপরি । কমলের মায়াজাল দেখে তীর্থরাম । ঈষৎ হাসিয়া বলে কর হরি নাম ॥ কাদিতে কঁদিতে তবে কমলকুমারী। ফিরে গেল তীর্থ হলো পথের ভিকারী ॥ উদ্ধারিয়া তীর্থরামে গৌরাঙ্গ সুন্দর। ছাড়িলেন তবে প্রভু সিদ্ধ বটেশ্বর ॥ কত লোক কত বস্ত্ৰ আনি জুটাইল। কিন্তু এক খণ্ড প্রভু হাতে না ছুইল ॥ গোবিন্দ বলিয়া প্রভু ডাক দিয়া শেষে । চাপড় মারিলা এক মোর পৃষ্ঠ দেশে ॥ সাত দিন গোয়াইকু এই বটেশ্বরে। নন্দীশ্বরে যাই চল দর্শনের তরে ॥ এই কথা শুনি কাধে লইলাম খড়ি। চলিলাম প্ৰভু সনে বটেশ্বর ছাড়ি ॥ পথে যেতে যেতে এক বিশাল জঙ্গল । দেখিয়া আমার মন হইল বিকল ॥ দশক্রোশ ব্যাপিয়া সে জঙ্গল বিথার । উপজিল ভাবনা কেমনে হব পার ॥ অন্তর্যামী প্ৰভু মোর ঈষৎ হাসিয়া । আগে চলি গেলা মুহি থাকিমু হঠিয়া ॥ প্রভূর পেছনে মুড়ি পথ বাহি যাই । র্তাহার ইচ্ছায় কোন ভয় নাহি পাই ॥ তার মধ্যে কত জন্তু বাসা করি আছে। একটিও দেখা নাহি দিল আগু পাছে ॥ জঙ্গল পার হৈয়া মুন্ন নগরের পাশে। বৃক্ষতলে বসিলেন বিশ্রামের আশে ॥ মুল্লাবাসী দুই জন গৃহস্থ আসিয়া । আটা আনি যোগাইল যতন করিয়া ॥
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।