গোবিন্দ দাসের করচ, 있어 ভাল মন কোন কথা প্ৰভু না কহিলা । ক্রমে তারা দুইজন নিকটে বসিলা ॥ নবীন সন্ন্যাসী হেরি তারা দুই জন। এক দৃষ্টে চেয়ে আছে না পড়ে নয়ন ॥ ক্রমে বড় গোলমাল হল সন্ধ্যাকালে। দেখিতে নগরবাসী আসে পালে পালে। আগুনের মত তেজ প্ৰভু অঙ্গে বহে। ইহা দেখি স্তন্ধ হয়ে সব লোক রহে ॥ ক্রমে ক্রমে আগুয়ান হয়ে মুন্নাবাসী একে একে প্রণাম করিল সবে আসি ॥ ভক্তিভাবে সব লোক কহিতে লাগিলা । চলহ নগরমধ্যে ছাড়ি গাছ তলা ॥ প্রেনে মত্ত মোর প্রভু নাহি শুনে কথা । অস্তরেতে হরি বলি কঁাদিছে সৰ্ব্বথা ॥ ক্রমে ক্রমে অস্তরেতে ভাব উপজিল। অমনি উঠিয়া প্ৰভু নাচিতে লাগিল । আছাড় খাইয়া পড়ে হরি হায় বলি। সেই সঙ্গে গ্রাম্য লোক হৈল কুতুহলী। করতালি দিয়া সবে নাচিতে লাগিল । তাহা হেরি প্রভু মোর কান্দিয়া উঠিল । যে পাষও এই ভাব দেখেছে নয়নে। ভক্তি উছলিয়া তার পড়িয়াছে মনে ॥ এইরূপে অৰ্দ্ধেক রজনী গেলা চলি । নাচিতেছে সব লোক হরি হরি বলি ॥ অবশেষে কুল হতে কুলবধূগণে । গেীরাঙ্গ দেখিতে আসি মিলে সেই স্থানে দেখিয়া নয়ন মেলি গৌরাঙ্গ সুন্দরে। নারীগণ যাইতে না পারে ফিরে ঘরে ॥ মুখ তাকাতাকি করি এ বলে উহারে । সন্ন্যাসী দেখিয়া প্রাণ আকু বাবু করে । এমন সুন্দর দিদি কভু দেখি নাই। ইহাকেই বলে সবে চৈতন্য গোসাই ॥ আহা মরি না খাইয়া অস্থি চৰ্ম্ম সার। এ বয়সে বাধিয়াছে কেন জটা ভার ॥ এই কথা বলি যত মুল্লারাসী নারী। কাদিয়া আকুল হৈল চক্ষে বহে বারি। এইভাবে রাত্রি গেল নিদ্রা না আইল । প্রাতে উঠি প্ৰভু মোর দক্ষিণে চলিল । বাকি বাধি মুন্নাবাসী থাকিতে কহিল । প্রভু মোর কোন উপরোধ না শুনিল । তথাকার একজন অতি দুঃখী নারী। সেই বৃক্ষতলে কানো চক্ষে বহে বারি ॥ যবে যাত্রা করে প্রভু যাইবার তরে। সেই বৃদ্ধ কেঁদে অন্ন বস্ত্র ভিক্ষা করে ॥ পহিরণে ছিন্ন বাস পেটে অন্ন নাই। তারে দেখি দাড়াইলা চৈতন্ত গোসাই ॥ তার ভাব দেখে প্রভু মনেতে বুঝিয়া । ইতি উতি ভিক্ষা মাগে ঈষৎ হাসিয়া ॥ বলে মোরে ভিক্ষ দেহ মুল্লাবাসী ভাই। অন্ন বস্ত্র ভিক্ষা পেলে তবে চলে যাই ॥ মুন্নাবাসী নর নারী আননো ভাসিয়া রাশি রাশি অন্ন বস্ত্র দিলেক আনিয়া ॥ সবে বলে পথের সম্বল তরে চায় । এ কারণ রাশি রাশি আনিয়া যোগায় ॥ সকলে ব্যাকুল বস্ত্র প্রভু হস্তে দিতে। গণ্ডগোল দেখি প্রভু লাগিলা হাসিতে ॥ সবে বলে বসনের তুল্য মুল্য নাই। আগে মোর বক্স লবে চৈতন্ত গোসাই ॥ প্রভুয় মনের ভাব কেহ নাহি জানে। তাই সবে ব্যস্ত হয়ে অন্ন বস্ত্র আনে ॥ প্ৰভু কেহ শুন শুন মুন্নাবাসিগণ। তোমাদের ভিক্ষণ আমি করিমু গ্রহণ ॥
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।