পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WO8 গোবিন্দ দাসের করচ{ এমন দয়াল প্রভু কভু দেখি নাই । ঘরে ঘরে নাম দেয় চৈতন্ত গোসাই ॥ এইখানে ছিল এক দুরাত্মা ব্রাহ্মণ । প্রভুরে কপট বলি করিল তাড়ন ॥ দলবল লয়ে সেই ব্রাহ্মণ ঠাকুর । দয়াল প্রভুরে বলে দুর দূর দূর ॥ ব্রাহ্মণ ঠাকুর বলে অরে জুয়াচোর। কপট সন্ন্যাসী সেজে করিতেছ জোর । গ্রাম্য লোকে মজাইছ ধৰ্ম্মশিক্ষা ছলে । এইদণ্ডে তাড়াইব প্রকাশিয়া বলে ॥ প্রভূর সম্মুথে আসি কত গালি দিলা । তার কটুবাক্য প্রভু হাসি উড়াইলা ॥ ব্রাহ্মণে ডাকিয়া শেষে চৈতন্ত গোসাই । বলে মোরে মেরে তুমি হরি বল ভাই ॥ আর যত লোক ছিল তার চারি ভিতে । বিপ্রের আচার দেখি ধাইল মারিতে ॥ দয়াল চৈতন্যদেব মনে বিচারিয়া । কহিতে লাগিলা বাণী বিপ্রে সম্বোধিয়া ॥ শুন ওহে দয়াময় ব্রাহ্মণ ঠাকুর। হরি হরি বল সুখ পাইবে প্রচুর ॥ অনিত্য দেহেতে আর কোন সুখ নাই । হরিনামে মজিয়া আনন্দ কর ভাই ॥ জড়পিও এই দেহ মরণসময় । কেহ নাহি সঙ্গে যাবে এই ত নিশ্চয় ॥ ভাই বন্ধু দারা সুত কেহ কার নয়। সবে বস্ত্র অলঙ্কার অর্থদাস হয় ॥ শৃগাল কুকুরে খাবে অনিত্য শরীর। পচিয়া গলিয়া যাবে এই কর স্থির ॥ হরি বলি বাহ তুলি নাচ মোর সনে । যাইতে হবে না আর শমন-সদনে ॥ দারা বল পুত্র বল বেদিয়ার খেলা । দিন দুই তরে করে সংসারেতে মেলা ॥ খাবার লাগিয়া ছল করে পরিবার। ভাব দেখি ভাই তুমি কে হয় তোমার ॥ গলে দিয়া প্রেম ফাশি নারী জোরে টানে । সেই টানে বোকা কর্তা মরেন পরাণে ॥ মুখেতে মধুর ভাষা অস্তরেতে বিষ । অর্থ না পাইলে হাতে করে খিশমিশ ॥ * যেতে নাহি দেয় কদাচন তত্বপথে । বন্ধনে ফেলিয়। ধ্বংস করে মনোরথে ॥ রমণীর প্রেম হয় গরল সমান। * অমৃত বলিয়া তাহা মুখ করে পান ॥ মৃত্যুকালে পুত্র কন্যা নিকটে আসিয়া । বলে বাবা মোর তরে গেল! কি করিয়া ॥ এই সব মনে করি সাধু বিপ্ৰ ভাই । ভক্তিসহ হরি বল এই ভিক্ষণ চাই ॥ আমাকে আঘাত কর তাতে দুঃখ নাই। প্রাণভরি হরি বল এই ভিক্ষণ চাই ॥ ভক্তিভরে হরি বল নাম সঙ্গে যাবে তাহাতে অনন্তকাল নিত্য মুথ পাবে ॥ চারিদিকে যত লোক ছিল দাড়াইয়া প্রভুর কথায় সবে উঠিল মাতিয়া ॥ হরিবোল বলি সবে নাচিতে লাগিল পাষণ্ড বিপ্রের চিত্ত বিশুদ্ধ হহল বিপ্র মাতি হরিনামে প্রভুর কৃপায় প্রভুর চরণতলে পড়িলা ধরায় ॥ এইরূপে ব্রাহ্মণেরে কৃতাৰ্থ করিয়া । চলিলা চৈতন্ত দেব নাগর ছাড়িয় ॥ যাত্রা করিবার কালে সন্ন্যাসিপ্রবর ইঙ্গিত করিলা মোরে উঠিতে সত্বর ॥

  • খিশ মিশ কিংবা গিশ গিশ। পুথির পাঠ হয়ত: অস্পষ্ট ছিল, কিন্তু শব্দঠি যাহাই থাকুক না কেন, ইহার অর্থ বিরক্তির ভাব প্রকাশ করা।