গোবিন্দ দাসের করচ, Øዓ সেই জ্ঞানবান তুমি অন্ধ মহাশয় । অস্তরে দেখিছ সব মোর জ্ঞান হয় ॥ অন্ধ বলে কেন ছল করুণানিধান । অন্ধ বলি দয়া কর তুমি ভগবান ॥ বহুকাল আছি আমি মন্দিরে পড়িয়া । স্বপ্নে ভগবতী মোরে দিয়াছে বুঝিয়া ॥ তুমি সেই ভগবান অগতির গতি। বলিলা একথা মোরে স্বপ্নে ভগবতী ॥ দয়াময় তোমারে জানিব তবে অামি । দেখাও যদ্যপি রূপ আঁধালারে তুমি ৷ পৰ্ব্বত উপাড় পিপীড়ার পদ দিয়া । পঙ্গু লঙ্ঘে হিমালয় তোমারে স্মরিয়া ॥ অগস্ত্য শোষিলা সিন্ধু তোমার কৃপায় । বিষপানে প্ৰহলাদের মৃত্যু নাহি হয় । বস্ত্র রূপে দ্রৌপদীর রাখিলে সন্মান । অন্ধ বিল্বমঙ্গলের চক্ষু দিলা দান ॥ অন্ধের শুনিয়া বাণী চৈতন্য গোসাই। বলে অপরাধী মোরে কেন কর ভাই ॥ সকল হৃদয়ে হরি করেন বসতি । জিজ্ঞাসিয়া দেখহ বলিবে ভগবতী । উচ্চারিলে যে কথা শুনিতে তাহা নাই । মিছে কেন অপরাধী কর মোরে ভাই ॥ সামান্ত মনুষ্য আমি অধম পামর । ভ্রাস্তি-কুপে পড়িয়াছে তোমার অন্তর। অন্ধ বলে কথায় অধিক কাজ নাই । দেখাও তোমার রূপ এই ভিক্ষণ চাই ৷ কান্দিয়া আকুল অন্ধ প্রভুর লাগিয়া । অন্ধের নিয়ড়ে প্রভু গেলেন চলিয়া । অন্ধের ভকতি দেখি গৌরাঙ্গ সুন্দর। ধীরে ধীরে প্রভু তার ধরিলেন কর । বাহ পশারিয়া গোরা অন্ধে আলিঙ্গিল। প্রভুর পরশে অন্ধ শিহরি উঠিল। বিদ্যুতের দ্যায় শীঘ্র নয়ন মেলিয়া । কৃতাৰ্থ হইল অন্ধ প্রভুরে দেখিয়া যেই দণ্ডে হেরিলেক মোর ধৰ্ম্মবীর । অমনি পড়িয়া অন্ধ ত্যজিল শরীর । হরিবোল বলি প্ৰভু অন্ধকে বেড়িয়া । নাচিতে লাগিল প্রেমে উন্মত্ত হইয়া । অন্ধের সমাধি সেই আঙ্গিনাতে দিয়া । চলিলা গৌরাঙ্গ পদ্মকোট তেয়াগিয়া । পদ্মকোট ছাড়ি প্রভু ত্রিপাত্র নগরে । গিয়া চণ্ডেশ্বর শিব দরশন করে । করিলে ববোম্ শব্দ তাহার মন্দিরে । প্রতিধ্বনি করি শব্দ দণ্ড কাল ফিরে । প্রকাণ্ড এক বিল্ববৃক্ষ আছে সে অঙ্গনে । সিদ্ধ বিম্ববৃক্ষ তারে বলে সৰ্ব্বজনে । সেস্থানে অনেক শৈব করেন বসতি। সুপণ্ডিত ভৰ্গদেব সেই দলপতি । বড়ই পণ্ডিত ভৰ্গদেব দর্শনেতে । করেন ছরের পূজা নিত্য আনন্দেতে ॥ সেই খানে মোর প্রভু শচীর নন্দন । ভক্তিভরে স্তব করে মুদিয়া নয়ন। বুদ্ধ ভৰ্গদেব শচীতনয়ে দেখিয়া । সব উদাসীন জনে বলে ডাক দিয়া । শুনেছ সকলে এক আশ্চর্য্য সন্ন্যাসী। এই দেশে ঘুরিতেছে তীর্থ অভিলাষী। অদ্ভূত মহিম। র্তার সৰ্ব্বলোকে কয়। এই ত সন্ন্যাসী সেই শচীর তনয় । সৰ্ব্বদা শান্তবী মুদ্র নয়ন মাঝারে । না রহিল পাপী তাপী হেরিয়া ইহারে । হরিনাম সুধাদানে দেশ ভাসাইল । আবালবনিতাবৃদ্ধে নামে মাতাইল । শুনেছি পাষগুগণে হরিনাম দিয়া । উদ্ধারিতে আসিয়াছে স্বদেশ ছাড়িয়া ।
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১২৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।