গোবিন্দ দাসের করচ θώ বিপ্র বলে কি দিয়া পুজিব অতিথিরে। কেমনে বলিব প্রভু যাহ তুমি ফিরে ॥ গেপোলের সেবা লাগি আছি এইখানে । ভিক্ষা করে সেবা করি আমরা দুজনে ॥ আসন নাহিক মোর কি দিব বসিতে । ব্রাহ্মণী বলিলা বিপ্র মাথা দা ও পেতে ॥ বিদ্যুত খেলিছে দেখ অতিথির পায় । তুলসী আনিয়া দেহ অতিথির গায়। তাড়াতাড়ি বিপ্র তবে তুলসী আনির । প্রভুর চরণে দিতে গেলেন ধাইয়া ॥ হাত ধরি বিপ্রে তবে চৈতন্য বুঝায়। তুলসী অর্পণ কর গোপালের পায় ॥ এই কথা শুনি বিপ্র কান্দিতে লাগিল । অমনি দয়াল প্রভু তারে আলিঙ্গিল | প্রভূ বলে তুমি বিপ্র বড় ভাগ্যবান । তব গৃহে বিরাজেন নিজে ভগবান ॥ কি কব ভাগ্যের কথা ঠাকুর তোমার। গোপাল তোমার গৃহে করেন বিহার ॥ সাক্ষাৎ কমল হন তোমার ঘরণা । মনে বিচারিয়া তুমি দেখহ আপনি । বিপ্র বলে ভাগ্য মানি তোমার কৃপায় । সামান্ত মানুষ তুমি নহ দয়াময়। তব অঙ্গে সৌদামিনী খেল। করে কেন । তব দেহে পদ্মগন্ধ অনুমানি হেন ॥ " তুমি যদি ভগবান নহ দয়াময়। তবে কেন তব অঙ্গে পদ্মগন্ধ বয় ॥ মোর মাথে তুলে দেহ তোমার চরণ। এত বলি মাথা পাতি দিলেন ব্রাহ্মণ ॥ এই বাক্যে দর্শনেতে রদনা কাটিয়া । দয়াল চৈতন্তদেব গেলেন পিছিয়া ॥ ব্যাকুল হুইয়া বিপ্র ব্রাহ্মণীর সাথে। পাইয়া গিয়া পদতলে নোয়াইলা মাথে । ση বাহু পশারিয়া প্ৰভু ব্রাহ্মণে তুলিলা । তারপরে ভক্তিভরে গান আরম্ভিলা ॥ ব্রাহ্মনের গৃহ যেন হৈল বৃন্দাবন। . হরিনাম শুনিবারে আসে গ্রাম্যজন। হরেকৃষ্ণ হরেকৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে । হরেরাম হরেরাম রাম রাম হরে হরে ॥ দয়াল চৈতন্য এই গান আরম্ভিল। সেই সঙ্গে শ্রোতা সব মাত্তিয়া উঠিল। নাম শুনি গ্রাম্যলোক প্রভুর বদনে। গড়াগড়ি দেয় সবে প্রভুর চরণে ॥ গাইতে গাইতে গান রাত্রি পোহাইল । প্রাতঃকালে মোর প্রভু ৰিদায় লইল । বিদায় লইয়া যবে প্রতু বাহিরায়। তাকাইয়া রহে লোক পুতুলের প্রায়। ইঙ্গিত করিলা মোরে গোবিন বলিয়া । কাধে তুলি লইলাম তখনি খড়িয়া । কাণ্ডার দেশের কাছে শোভে নীলগিরি। অপরাহ্লে সেইখানে যাই ধারি ধারি ॥ কিবা শোভা পায় আহা নীলগিরিরাজে। ধ্যানে মগ্ন যেন মহাপুরুষ বিরাজে ॥ কত শত গুহা তার নিম্নে শোভা পায় । আশ্চৰ্য্য তাহার ভাব শোভিছে চুড়ায় ॥ বড় বড় বৃক্ষ তার শিরে আয়োহিয়া । চামর ব্যজন করে বাতাসে দুলিয়া ॥ ঝড়ঝড় শব্দে পড়ে ঝরণার জল । তাহা দেখি বাড়িল মনের কুতুহল । , পৰ্ব্বতের নিয়ড়েতে ঘুরিয়া বেড়াই। নবীন নবীন শোভা দেখিবারে পাই ॥ কতশত লতা বৃক্ষে করিয়া বেষ্টন। আদরেতে দেখাইছে দম্পতী-বন্ধন ॥ ময়ুর বসিয়া ডালে কেক রব করে। নানা জাতি পক্ষী গায় সুমধুর স্বরে।
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।