গোবিন্দ দাসের করচা و\وV আধ নিমীলিত চক্ষু জটা এলায়েছে। ধূলা মাটী মেখে অঙ্গ মলিন হয়েছে। কোথায় প্রাণের কৃষ্ণ এই বলি ডাকে। কখন বা হাত তুলি উদ্ধ মুখে থাকে। গোবিন্দ রে কাহা কৃষ্ণ মিলাও আনিয়া । কোথায় প্রাণের কৃষ্ণ দেহ দেখাইয়া ॥ এক বার ঐ বলি ধাইয়া যাইল। বাহু পশারিয়া নিম্বে জড়ায়ে ধরিল ॥ ঈশ্বরের প্রেমে মত্ত হইল নিমাই। এমন উম্মাদ মুহি কভু দেখি নাই । বহু দিন সঙ্গে থাকি ফিরি নানা দেশ । দেখি নাই কেনে দিন এমন আবেশ ॥ রামানন্দ গোবিন্দ চরণ দুই ধারে । তালি দিয়া হরি ধ্বনি করে বারে বারে ॥ প্রকাও এক গৰ্ত্ত ছিল সড়কের ধারে । আবেশে গড়ায়ে পড়ে তাহার ভিতরে । এক জন তুষ্ট আসি করি হানা পান । প্রভূরে বলিলা কেন কর প্রবঞ্চন ॥ গ্রাম্য লোকে ভুলাইয়া অর্থ লবে হরি। তাই বেড়াইছ তুমি হরিধ্বনি করি। সন্ন্যাসীর পরীক্ষা লইতে আসিয়াছি। কত শত কপট সন্ন্যাসী দেখিয়াছি ॥ সে পাষও এই কথা কহিলা যখন। প্রহার কহিতে তারে চাহে গ্ৰাম্য জন ॥ প্রভু বলে ভাই সব মারিবে কাহারে। হরিনাম স্বধা পান করাও উহারে ॥ পিপাসায় শুষ্ক কণ্ঠ হয়েছে উহার । উহার বদনে স্বধা দেহ এক ধার ॥ ভক্তি বিনা শুকায়েছে উহার হৃদয়। নাম দিয়া নাশহ উহার যমভয় ॥ মরুভূমি সম হয় পাষণ্ডের মন । উৎপাদিকা শক্তি তাহে করহ অর্পণ ॥ এস সাধু মোর কাছে হরিনাম দিব। তোমার পাপের ভার উতারিয়া নিব ৷ সব তাপ দূর হবে এই মন্ত্র বলে। হরিনাম মন্ত্র পাঠে সদ্য ফল ফলে ॥ এই মহামন্ত্র পাঠ করে যেই জন । সে পাপী নরকে কভু না করে গমন ॥ এমন সুলভ মন্ত্র থাকিতে জগতে । পাপী কেন অনর্থক ফিরে মন্দ পথে ॥ এত বলি মহাপ্রভু তার কাছে গিয়া । হরিনাম মৃধা কর্ণে দিলেন ঢালিয়া । দয়াল চৈতন্ত জীবে করিতে নিস্তার। ভ্ৰমিছেন ইতি উতি হয়ে নিৰ্ব্বিকার ॥ জানালা হইতে দেখি এসব ব্যাপার বারমুখী মনে মনে করয়ে বিচার ॥ আশ্চৰ্য্য প্রভুর দয়া দেখিয়া নয়নে। আপনারে ধিক দেয় বসিয়া নির্জনে ॥ বারমুখী বলে ছিছি অর্থের লাগিয়া। দিনে শত বার দেহ ফেলাই যেচিয়া ॥ পাপমুৰ্ত্তি পরপুরুষের সঙ্গে মেলি । ছি ছি নিত্য নিত্য আমি করি কাম-কেলি। এই যে সন্ন্যাসী দেখি ঈশ্বর সমান। . সব ছাড়ি যাই মুহি এর বিদ্যমান। সন্ন্যাসীর টাকা কড়ি সঙ্গে কিছু নাই। তবে কেন উহারে দেখিয়া সুখে পাই ॥ কেন বা নরক ভোগ ঘরে বসে করি। আমার প্রতি কি দয়া না করিবে হরি ॥ বালাজী দুষ্টের কাণে কি মন্ত্র পড়িয়া। এই ত সন্ন্যাসী দিলা উদ্ধার করিয়া ॥ ইহার নিকটে গিয়া পাপ ক্ষয় করি। কাছে গিয়া জড়াইয়া পদ চাপি ধরি। জানালা হইতে ইহা বারমুখী বলে। তার কথা গুনে মুখী হইলা সকলে।
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১৫৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।