গোবিন্দ দাসের করচ উদ্ধারের ইতিহাস >> করচাখানি প্রকাশ-কল্পে পণ্ডিতকুলাগ্রগণ্য শাস্তিপুর নিবাসী পরম ভাগবত ৮ মদন গোপাল গোস্বামী মহাশয় বিশেষ উৎসাহ প্রদান করিয়াছিলেন। তখন অনেকেই প্রাচীন পুথিখানি দেখিয়াছিলেন। তাহদের মধ্যে কেহ কেহ এখন ও জীবিত আছেন। স্থানান্তরে রায় বাহাদুর শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যার এবং পণ্ডিতপ্রবর লক্ষ্মীকান্ত তর্কচূড়ামণি মহাশয়ের পত্র মুদ্রিত হইল। ইছারা স্বচক্ষে সেই প্রাচীন পুস্তকপানি দেখিয়াছিলেন। আমি স্বৰ্গীয় জয় গোপাল গোস্বামী মহাশয়ের জেষ্ঠ্য পুত্র, অামার বয়স এখন ৭০। কিছু কালের জঙ্গ প্রাচীন পুথি পানি আমাদেয় বাড়ীতে ছিল । আমি ও তাহা দেখিয়াছিলাম । গোবিন্দদাস কায়স্থ কিম্বা কৰ্ম্মকার হউক, আমাদের তাহাতে কোন স্বর্থ নাই । এই পুস্তকে দক্ষিণ পথের যে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আছে, তাহ আজীবন কেহ দক্ষিণাত্য ঘুরিয়া না আসিলে কল্পনা করিতে পারে না । যে সকম গ্রামের উল্লেখ আছে তাহার কোন কোনটি সার্ভে অফিসের ম্যাপে পর্য্যন্ত উল্লিখিত নাই। র্যাহারা আমার স্বগীয় পিতৃদেবকে নিতান্ত অঙ্গায় ভাবে আক্রমণ করিতেছেন, এবং প্রতীরক বলি। প্রতিপন্ন করিতে চাহিতেছেন তাহাদের এই ঘোর বৈষ্ণব নিনগ্নপরাধের প্রায়শ্চিত্ত নাই। এইরূপ অদ্যায় এবং মিথ্যা অভিযোগে যে আমাদের অস্তকরণে কি কষ্ট হইতেছে, তাহ। আর কি লিখিব ? পুস্তকের কোন কোন স্থানে প্রাচীন জটিল শব্দ তিনি সম্পাদন কালে পরিবর্তন করিরা ছিলেন। হয়ত: কখনও কোন কীটদষ্ট ছত্রাংশ লুপ্ত হওয়াতে তাহা তিনি পূরণ করিয়াছেন ! প্রাচীন পুথি সম্পাদন কালে সকলেই এইরূপ করিয়া থাকেন । আমি যাহা লিখিলাম, তাহা সরল সত্য । এই ঘোর কলিযুগে রাত্রিকে দিন প্রমাণ করিবার জন্য সাক্ষীর অভাব হয় না । সুতরাং এরূপ প্রমাণও আসিতেছে যে পুথিখানি জাল করিবার অপরাধে আমরা এক ঘরে হইয়াছিলাম। আমাদের সমাজ যদি আজ এত বড় জাগ্রত হইত তবে দেশের দুর্দিন কাটিয়া যাইত। জ্ঞাতি বিরোধে এ দেশে কতই না কাও হইতেছে। মামি ভগবানের নিকট প্রার্থনা করি র্যাহার। আমাদিগের প্রতি এই সকল অত্যাচার করিতেছেন, তাহাদিগকে যেন তিনি মার্জন করেন। কোথায় সেই বৈষ্ণব বিনয় আর কোথায় সেই ভক্তির উচ্ছাস ? চৈতন্তকে আমার পূৰ্ব্বপুরুয় অদ্বৈতাচাৰ্য্য কঠোর সাধন দ্বারা লাভ করিয়াছিলেন। চৈতন্য আমাদের বংশের আত্মীয় হইতে ও আত্মীয়—আমাদের বংশের ধ্যান ও ধৃতি। চৈতন্তকে হীনপ্রভ তুমি করিতে পার, কিন্তু অদ্বৈতের বংশধর এমন কাজ করিতে কখনই ধাবিত হইবে না। করচার মধ্যে এমন কোন স্থান নাই, যাহা গেীর-গরিমার হস্তারক। তাহা হইলে পিতৃদেব এই করচা প্রকাশ করিতেন না। - ঐবনোয়ারী লাল গোস্বামী।
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।