পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮২ গোবিন্দ দাসের করচা পাষও মায়াবী দুঃখী যে যেখানে ছিল। হরিনাম দিয়া প্ৰভু সবে মাতাইল । সৰ্ব্বদা থাকয়ে গোরা আনন্দে মাতিয়া । কত পাপী উদ্ধারিলা হরি নাম দিয়া ॥ পর দিন রসালকুণ্ডেতে মোরা যাই সেই স্থানে কুৰ্ম্ম দেবে দেখিবারে পাই ॥ কুৰ্ম্মদেবে দেখি প্ৰভু প্রেমে মাতয়ারা। ঝর ঝর কুনয়নে বহে অশ্রুধারা। জোড় হস্তে বহু স্তব কূৰ্ম্মদেবে করে। আছাড়িয়া পড়ে প্রভু ভূমির উপরে ॥ রসালকুণ্ডের লোক বড় ভক্তিহীন । ইহ দেখি প্রভু তথা রহে তিন দিন ॥ কিবা নর কিবা নারী সকলে ডাকিয়া । উদ্ধার করেন প্রভু হরিনাম দিয়া ॥ প্রভুর কৃপায় সবে মাতিয়া উঠিল। ভক্তিসহ হরিনাম করিতে লাগিল ॥ এইস্থানে ছিল এক মাড় য়া ব্রাহ্মণ । তার পুত্র প্রভুসঙ্গে করিল মিলন ॥ ব্রাহ্মণের পুত্র বলে মোরে দয়া কর। পদধূলি দিয়া প্ৰভু মোর দুঃখ হর । অত্যন্ত পাষণ্ড মুহি কিছু নাহি জানি । ভক্তি দিয়া মোরে ত্রাণ করহ আপনি ॥ মোর পিতা কৃষ্ণনাম সহ নাহি করে । কৃপা করি ভক্তি দেহ ঠাহার অস্তরে ॥ এই দুঃখ বড় পিতা কৃষ্ণদ্বেষী হয় । তার মনে ভক্তি দেহ প্ৰভু দয়াময় ॥ বৈষ্ণব দেখিলে পিতা করে তিরস্কার । দয়া করি ঘূচাও সমস্ত পাপ তার ॥ শুনিয়াছি তুমি নাকি কৃপার আলয়। এই ভিক্ষণ দেহ মোরে অহে দয়াময় ॥ শুনিয়া শিশুর পৃষ্ঠে প্রভূ হাত দিলা । অমনি তাহার চিত্তে ভক্তি উপজিলা ॥ এই কথা শুনি বিপ্র ক্রোধে অন্ধ হৈয়া । যষ্টি হাতে প্রভুর নিকটে এলো ধাইয়া ॥ বিপ্র বলে গুন আরে ভও দুরাচার। এক মাত্র পুত্র নষ্ট করিলি জামার ॥ এই যষ্টি দিয়া তোরে আঘাত করিব। কে তোরে করিবে রক্ষা এখনি দেখিব ॥ জোড় হস্তে কান্দি বলে ব্রাহ্মণ কুমার। দয়াময় অপরাধ ক্ষমহ পিতার ॥ নিতান্ত অজ্ঞান পিতা না চিনে তোমায়ে । চরণের দাস বলি ক্ষমহ আমারে ॥ এই শুনি মাড় য়ারে তাড়না করিয়া । দুই চারি জন লোক উঠিল ঝাকিয়া ॥ মাড়য়া ব্রাহ্মণ কারু বাক্য না শুনিল । যষ্টিহাতে চৈতন্তেরে মারিতে উঠিল ॥ ৯ বিপ্র বলে মোর পুত্রে বৈষ্ণব করিয়া । সঙ্গে করে লয়ে যাবি তুই ভুলাইয় ॥ ছেলে ভুলাইয়। তুমি যাইবে কোথায় । এইবার দণ্ড করি বুঝিব তোমায় । বহুত সন্ন্যাসী মুহি দেখেছি নয়নে। এইবার শিক্ষা তুহি পাবি মোর স্থানে ॥

  • গোবিন্দর করুচ ভিন্ন অষ্ঠ কোন গ্রন্থে চৈভস্যদেব সম্বন্ধে সমস্ত সরল সত্য কথা লিখিবার এরূপ সাহস দৃষ্ট হয় না। মেদিনীপুরে ধনী কেশব সামন্ত | স্তহার উপদেশ গ্রাহ করে নাই, (১৬ পৃঃ), অপরাপর স্থলেও এইরূপ বর্ণনা আছে, “কোথাকার পাগল

| ! | i - - t | | এসেছে কেহ বলে” ৩৯ পৃঃ । “কেহ বলে ওরে ভাই সেই ক্ষেপ যায়। হরি হরি বলি সবে ক্ষেপাও ইহার ॥” (৩৯ পৃঃ) এইরূপ উল্লেখ অনেক স্থলে আছে। পরবর্তী সাহিত্যে চৈতন্যদেব একেবারে বিগ্ৰহ হইয়। দাড়াইয়াছেন। তাহার সম্বন্ধে এতটুকু অসম্মানকর কথা কাহারও সহ হয় নাই। কিন্তু তাহা সত্বেও I এই স্পষ্টবাদী লেখকের চৈতষ্ঠভক্তি অতুলনীয়। | পাপী তাপীর প্রভুকে সৰ্ব্বদাই চিনিতে পারে নাই, | তাহাতে কি তাছার গৌরব ক্ষুন্ন হইয়াছে ? না সত্য কথার আলোকে তাহ আরও উজ্জ্বল হইয়াছে ?