>W。 গোবিন্দ দাসের করচা পুথি দেখিয়া গোস্বামী মহাশয় করচা প্রকাশ করিয়াছিলেন, তাহার উভয়খানি মালিকদিগকে ফিরাইয়া দেওয়া হইয়াছিল। এবং এখন তাহ পাওয়া অসম্ভব। একথা নিশ্চিত যে এ দেশের বহু স্থানে ভূনিম্নে রত্বরাজি নিহিত আছে, কিন্তু বলা মাত্র কি কেহ তাহ খোজ করিয়া বাহির করিতে পারিবেন ? এই সকল পুথি নিউম্যান কিংবা থ্যাকারের বাড়ীতে চিঠি লিখিলে পাওয়া যাইবে না। যাহাঙ্গের বাড়ীতে প্রাচীন পুথি আছে, অনেক সময় তাহারাই সে সকলের খোজ জানে না । হস্ত-লিখিত প্রাচীন পুথি উদ্ধার করা খুব সহজ ব্যাপার নহে। বাঙ্গালা পুথি সংগ্রহের কার্য্য অতি সামান্তরূপ আরব্ধ হইয়াছে। করচাতেই এরূপ একটা আভাস আছে যে পুস্তকখানি কোন কারণে গোবিন্দ দাস গোপন করিয়াছিলেন, সুতরাং ইহার প্রাচীন পুথি খুব সুলভ হইবে না, একথা নিশ্চয়। তাহার উপর আবার এই পুথির বিরুদ্ধে বিষম ষড়যন্ত্র চলিতেছে। প্রাচীন বাঙ্গলা পুথি প্রায়ই নিম্ন শ্রেণীর লোকদের ঘরে রক্ষিত আছে। খড়ো ঘরের চালের ফুটা দিয়া বর্ষার দিনে যে অজস্র জলধারা বর্ষিত হয় তাহাতে বৎসর বৎসর শত শত পুথি নষ্ট হইতেছে। তাহা ছাড়া অগ্নিদাহ, বন্ত এবং শিশুদের দৌরাত্ম্য তো আছেই। অনেকে আবার প্রাচীন পুথি মাঝে মাঝে গঙ্গাগর্ভে নিক্ষেপ করিয়া থাকেন। যে সকল গ্রন্থকার দেশ-বিখ্যাত, অনেকস্থলে তাহাদের রচিত পুস্তকেরই প্রাচীন পাণ্ডুলেখা পাওয়া যাইতেছে না। কৃত্তিবাসের সুদীর্ঘ আত্ম-বিবরণ সম্বলিত একখানি প্রাচীন রামায়ণের পুথি সাহিত্য পরিষদের পুথিশালায় ছিল, তাহা আমি দেখিয়াছিলাম এবং শ্ৰীযুক্ত হীরেন্দ্র নাথ দত্ত প্রমুখ অনেকেই দেখিয়াছিলেন। সে পুথিখানি এখন পাওয়া যাইতেছে না। উক্ত আত্মবিবরণ সম্বলিত ১৫০১ খৃষ্টাব্দে লিখিত আর একখানি রামায়ণ হুগলী বদনগঞ্জ নিবাসী yহারাধন দত্ত ভক্তিনিধি মহাশয়ের বাড়ীতে ছিল, রায় বাহাদুর যোগেশ চন্দ্র রায় মহাশয়, সেই পুথিখানি দেখিয়াছিলেন। কিন্তু তাহা আর পাওয় যাইতেছে না। সাহিত্য পরিষদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালায় শতাধিক কৃত্তিবাসী রামায়ণের প্রাচীন পুথি আছে, তাহার কোনটিতেই সেই আত্মবিবরণ নাই এবং তাহা আর কোথাও মিলিতেছে না। কেহ কি চাহিলেই তাহা বঙ্গদেশ হইতে খুজিয়া বাহির করিতে পারিবেন ? এই না পাওয়ার অপরাধে কি আত্মবিবরণ বাতিল করিতে হইবে ? প্রেমবিলাস-রচয়িত নিত্যানন্দ দাস পুনঃ পুন: উল্লেখ করিয়াছেন, যে তিনি একখানি বৃহৎ নিত্যানন্দ-জীবনী লিখিয়াছিলেন, কিন্তু সেই পুস্তকের প্রাচীন পুথি পাওয়া যাইতেছে না। কৃষ্ণদাস কবিরাজ র্তাহার চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থের মধ্য খণ্ডের ২৫ পরিচ্ছদের ৮ম শ্লোকে উল্লেখ করিয়াছেন যে তিনি “পঞ্চতত্ত্বাখ্যান” নামক একখানা বৃহৎ পুস্তক রচনা করিয়াছিলেন। এ পর্ষ্যস্ত তাহার কোন হদিস পাওয়া যায় নাই। লাল জয়নারায়ণ সেনের রচিত “হরিলীলা” গ্রন্থ ঢাকা অঞ্চলে অষ্টাদশ শতাব্দীতে বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করিয়ছিল। তাহার একখানি প্রাচীন পুথি বহু চেষ্টায় ফরিদপুরের ইতিহাস লেখক
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।