পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

फूबिक ২৯ পড়িয়াছেন। যদি করচার ভুল তাহারা বাহির করিতে চান, তবে একবার তাহাদের “প্রামাণিক” গ্রন্থ গুলির ঐতিহাসিক সত্যতার পরিচয়ও ভাল করিয়া লউন । সেখানে যে শত শত ছিদ্র গর্তের মত স্থা করিয়া আছে। পূর্বে উক্ত হইয়াছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন পুথিশালায় এই অবতার-বাদ প্রচারক বহু প্রাচীন সংস্কৃত ও বাঙ্গাল গ্রন্থ আছে। যে চৈতন্ত প্রভুর সম্বন্ধে বৃন্দাবন দাস লিখিয়াছেন “নিরবধি দান্ত ভাবে প্রভূর বিহার। মুই কৃষ্ণদাস বই না বলায় আর ॥ হেন কার শক্তি নাই সম্মুখে তাহানে। ঈশ্বর করিয়া বলিবেক দাস বিনে ॥” (চৈ-ভা, অস্ত্য-১০ শ্লোক ) তিনি কখনও এই অবতারবাদের পক্ষপাতী হইতে পারিতেন না। রায়বাহাদুর রসময় মিত্র লিখিয়াছেন * যে তিনি বহুদিন যাবত চৈতন্যচরিতামৃতের সঙ্গে করচার ভাব ও ভাষার অনৈক্য দেখিয়া উহ জাল প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টায় ছিলেন। দৈবক্রমে জয়গোপাল গোস্বামী মহাশর তাহার একখানি পুস্তক পাঠ্য করিবার চেষ্টায় তাহার নিকট আসিয়াছিলেন। এই সুযোগ পাইয়। তিনি গোস্বামী মহাশয়ের পুস্তক পাঠ্য করিবার লোভ-প্রদর্শন পূৰ্ব্বক করচার অন্তত প্রথমাংশ যে জাল তাহা কবুল করিতে অনুরোধ করিলেন এবং তদ্ভুত্তরে তিনি গোস্বামী মহাশয়ের যে যে আকার ইঙ্গিত পাইলেন তাহাতে তাহার স্পষ্ট ধারণ হইল যে করচার কতকাংশ তিনি জাল করিয়াছেন। পুস্তক পাঠ্য করিবার লোভ দেখাইলে গ্রন্থকারদের নিকট হইতে ঐরুপ আকার ইঙ্গিত পাওয়া খুব কঠিন নহে। এসম্বন্ধে বনোয়ারী খাবুর পত্র হইতে কিঞ্চিৎ উদ্ধত করিতেছি “রসময় আমা অপেক্ষ বয়সে ছোট, মুতরাং যে সময় করচ বাহির হয় তখন তিনি green horn । তাহার বংশের সহিত আমাদের বংশে কোন কালে সখিত্ব ছিল না । বাবার বন্ধুগণকে আমি প্রায়ই চিনিতাম । রসময় যে তাহার হৃদয়ের বন্ধু ছিলেন, তাহা আমি জানিতাম না। যদি পণ্ডিত মহাশয় জাল করিয়া করচা বাহির করিতেন, তাহা হইলে সে কথা পথের গালাপী, গাড়ীর সহযাত্রী রসময়ের নিকট রসোগার অবশুই করিতেন না। পাপগোপন লোকের স্বভাব, স্বকৃত পাপ প্রচার করিবার জন্ত প্রবীন গোস্বামী রসময়-ডঙ্কা গলায় বাধিয়া কলিকাতার রাস্তায় রাস্তায় বাহির হইয়াছিলেন, এমন কথা কাহারও বিশ্বাস করিবার প্রবৃত্তি হইবে না।” যাহারা শিক্ষিত হইয়াও এরূপ ভাবে করচাকে মিথ্যা প্রমাণ করিতে দাড়াইয়াছেন, তাহাদের উপর আমার বিশেষ অশ্রদ্ধার কারণ নাই—যেহেতু তাহারা সংস্কারান্ধ হইলেও

  • রসময় মিত্র মহাশয় লিখিয়াছেন "আমি তাহাকে (জয়গোপাল গোস্বামী মহাশয়কে) বলিলাম “গোস্বামী মহাশয়! যদি অকপট ভাবে আমাকে একটি প্রকৃত কথা বলেন, তাহা হইলে আমি আহলাদ সহকারে আপনার বইখানি হেয়ার ও হিন্দু স্কুলে পাঠ্য তালিক ভুক্ত করিয়া দিব। করচ, সম্বন্ধে প্রকৃত কথা কি তাহ আমাকে বলুন—আমার উহার সম্বন্ধে একটা বিশেষ সন্দেহ আছে।"

আনন্দ বাজার পত্রিকা ৩রা ফাঙ্কন, ১৩৩১ ।