WS8" গোবিন্দ দাসের করচা এবং মতিলাল ঘোষ মহাশয়দ্বয় সন্দিহান হইয়াছিলেন, ( এবং যে কারণে হইয়াছিলেন, তাহা পূৰ্ব্বেইে লিখিত হইয়াছে। ) তথাপি তাহারা ছিলেন গুণগ্রাহী লোক।" করচার অনন্তসাধারণ শ্রেষ্ঠত্ব উভয় ভ্রাতাই বিশেষভাবে হৃদয়ঙ্গম করিয়াছিলেন। ৪০৭ গৌরাঙ্গাবে ঐবিষ্ণুপ্রিয়া পত্রিকায় শ্রদ্ধেয় শিশির কুমার ঘোষ মহাশয় করচ, সম্বন্ধে যে সকল প্রবন্ধ প্রকশিত করেন, তাহাতে এই গ্রন্থের প্রতি তাহার উচ্চ ধারণা প্রতীয়মান হয়। ৪১০ গৌরাঙ্গাদে শ্ৰীবিষ্ণুপ্রিয়া পত্রিকায় শ্রদ্ধাস্পদ মতিলাল ঘোষ মহাশর করচ, সম্বন্ধে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত করেন। তাহার কতকাংশ নিম্নে উদ্ধত হইল — 4. “শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গলীলা সংক্রান্ত এরূপ উপাদেয় ও ঘটনাপূর্ণ গ্রন্থ অতি বিরল। • • প্রভুর ভ্রমণকালে গোবিন্দ বরাবরই র্তাহার সঙ্গে ছিলেন, এবং তাছার সমস্ত কাৰ্য্য তিনি স্বচক্ষে দর্শন করেন। * * স্বতরাং তাহার বিবরণ গুলি যে বিশেষ জীবন্ত ও পুখামুপুঙ্খরূপে বর্ণিত, তাহা বলা বাহুল্য । বস্তুত গোবিন্দের বর্ণনাগুলি পাঠ করিলে স্বীকার করিতে হইবে যে প্রভুর কার্য গুলি তিনি স্বচক্ষে দেখিয়া লিখিয়াছিলেন। চক্ষুর দর্শন ভিন্ন এরূপ বর্ণনা করা দুঃসাধ্য * + বাঙ্গালী মাত্রেরই এ গ্রন্থ পাঠ করা কর্তব্য ; এবং যিনি ইহা পাঠ করিবেন তাহাকেই স্বীকার করিতে হইবে যে কল্পনা দ্বারা এরূপ বর্ণনা করা অসম্ভব। * * কিন্তু শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে দেখা যায় যে কেবল কৃষ্ণদাসই প্রভুর সহিত দক্ষিণে গমন করেন, গোবিনোর নাম গন্ধ ও উহাতে নাই। এমন স্থলে গোবিদের করচা কেমন করিয়া বিশ্বাস করা যাইতে পারে ? ইহার উত্তর এই যে যদিও চৈতন্যচরিতামুতে গোবিন্দের নাম দেখা যায় না, কিন্তু তাছাই বলিয়া প্রভুর সহিত যে গোবিন্দ দক্ষিণে গমন করিয়াছিলেন না, ইহা প্রমাণিত হয় না। • • কৃষ্ণদাস কবিরাজ অন্তের মুখে শুনিয়া অনেক পরে কৃষ্ণদাসের কথা তাহার গ্রস্তে লিখিয়াছিলেন । * * এতদ্ভিন্ন দক্ষিণ-ভ্রমণের পর প্রভুর জীবনীতে এত বৃহৎ বৃহৎ ঘটনা ঘটিয়াছিল যে দক্ষিণে তাহার সঙ্গে কে কে গিয়াছিলেন এ সমস্ত সামান্ত বিষয় বলিয়া ( কৃষ্ণদাস কবিরাজের উপকরণ-দাতা ) দাসগোস্বামী প্রভৃতির এ সম্বন্ধে ঠিক বিবরণ দেওয়ার তত উদ্যোগ না হওয়ারই কথা । * * জনশ্রুতি দ্বারা তিনিও এই বিবরণ অবগত হইয়াছিলেন, সম্ভবতঃ দক্ষিণ হইতে প্রভুর প্রত্যাগমন বার্তা কৃষ্ণদাস নদীয়ায় লইয়া আসেন বলিয়া লোকের মনে বিশ্বাস হয় যে তিনিই মাত্র দক্ষিণে প্রভূর সঙ্গী ছিলেন। * * সে যাহাহউক গোবিন্দের করচ অবিশ্বাস করা যায় না • • এরূপ গ্রন্থ চোখে না দেখিয়া লিখিত হইয়াছে এরূপ মনে ধারনাই করা যাইতে পারে না।” আধুনিক বহু বৈষ্ণবগ্রন্থ করচাকে অবলম্বন করির লিখিত হইয়াছে। (১) স্বৰ্গীয় শিশিরকুমার ঘোষ মহাশয় তাহার অমিয় নিমাইচরিতের গোটা ষষ্ঠ খণ্ডটা গোবিন্দদাসের করচাকে আশ্রয় করিয়া লিখিয়াছেন। (২) শ্ৰীখণ্ডের স্বপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত শ্ৰীযুক্ত গৌরগুণাননা ঠাকুর তাহার লিখিত “শ্ৰীখণ্ডের প্রাচীন বৈষ্ণব" নামক প্রসিদ্ধ গ্রন্থে এই পুস্তক হইতে
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।