পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छूमिक 8X চন্দ্রপুর ছাড়িয়া “দুই দিবা রাত্রি যাই পৰ্ব্বত ভেদিয়া । তার মধ্যে গ্রামপুরী না পাই খুজিয়া ॥ বড়ই দুর্গম পথ চলিতে না পারি। কেবল কদম্ব বৃক্ষ দেখি সারি সারি।” ( ৪৮ পূঃ ) ইত্যাদি বর্ণনা কল্পনা হইতে উদ্ভূত বলিয়৷ কিছুতে মনে হইবে না। করচার প্রথম পৃষ্ঠায়ই লিখিত আছে যে গোবিন্দ দাসের স্ত্রী ঝগড়া করিয়া তাহাকে নিগুৰ্ণ ও মুখ বলিয়া গালাগালি দেয়। এই ভাবে স্ত্রীর নিকট অপমানিত হইয়া গোবিন্দ দাস গৃহত্যাগী হন। সন্ন্যাস-গ্রহণের পরে চৈতন্য যখন কাঞ্চননগরের পথ দিয়া যাইতে ছিলেন, তখন শশিমুখী সংবাদ পাইয়া ছুটিয়া আসিয়া গোবিন্দের পায়ে পড়িল এবং করুণভাবে বিলাপ করিতে লাগিল। চৈতন্তদেব তাহাকে তত্ত্ব কথা দ্বারা নিবৃত্তি করিতে চেষ্টা করিলেন কিন্তু “শুনিয়া প্রভুর সেই কথা আচম্বিতে । চক্ষু চাপি আঁচলেতে লাগিল৷ কান্দিতে ” সাধবীর করুণ ক্রদনে “প্রভুর দয়া উপজিল। অমনি ফিরিয়া মোরে কহিতে লাগিল । প্রভু কয় গোবিন্দেরে গৃহে থাক তুমি । অন্য ভূত্য সঙ্গে করি পুরী যাই আমি।” (১৩ পৃঃ) যে ব্যক্তি চৈতন্তসঙ্গের অস্বিাদ,পাইয়াছে, সে আবার সংসারে আবদ্ধ হইবে কিরূপে ? গোবিন্দ দাস শশিমুর্থীর হাত এড়াইয়া স্বীয় বন্ধুবান্ধবগণেব যুক্তিতর্ক ব্যর্থ করিয়া আবার চৈতন্তদেবের অসুবত্তী হইলেন। তারপর যখন দুই বৎসর পরে চৈতন্তদেব দাক্ষিণাত্য প্ৰমণান্তর পুরীতে ফিরিয়া আসিলেন, তখন শশিমুখী লোকমুখে অবস্ত তাহার খোজ লষ্টয়াছিল। সে কালে পুরীর পথ সহজ ছিল না । প্রেমদাসকৃত চৈতন্যচন্দ্রোদয় কৌমুদীতে পুরীর পথে ঘাটিয়ালদের যে সকল দৌরাত্ম্যের কথা আছে তাহাতে মনে হয় সে সময় যে কোন ব্যক্তি বঙ্গদেশ হইতে পুরীতে যাইতে হইলে আতঙ্কিত হইতে । শিবানন্দসেনের মত প্রবল প্রতাপাম্বিত ব্যক্তির আশ্রয়ের উপর নির্ভর করিয়া কয়েকজন বাঙ্গালী ভক্ত মধ্যে মধ্যে মহাপ্রভুর সঙ্গে দেখা করিতে যাইতেন। ঘাটিয়ালদের দৌরাত্ম্য এরূপ ভয়ানক ছিল যে একবার শিবানন্দ সেনও তাহাদের দ্বারা কারারুদ্ধ হইয়াছিলেন। তৎসময়ে (ষোড়শ-শতাব্দীর প্রথমার্দ্ধে । পুরীর পথ স্ত্রীলোকদিগের পক্ষে অতি দুর্গম ছিল। সুতরাং শশিমুখী সম্ভবতঃ লোকমুখে তাহার স্বামী সম্বন্ধে সংবাদ লইয়াছিল। একবার যেরূপ চৈতন্য গোবিন্দকে গৃহে ফিরিয়া যাইবার আদেশ করিয়াছিলেন, এবারও শশিমুখীর কাতরতা দেখিলে তিনি হয়ত তাহাই করিবেন, সম্ভবতঃ এইভয়ে গোবিন্দদাস আত্মগোপন করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। করচার প্রথমাংশে তাহায় নিজ সম্বন্ধে বিস্তৃত পরিচয় আছে, এবং অনেক পত্রেই তাহার নাম দেখিতে পাওয়া যায় ; সুতরাং ধরা পড়িবার ভয়ে তিনি করচাখানি একবারে গুপ্ত করিয়া ফেলিয়াছিলেন, “করচা করিয়া রাখি অতি সঙ্গোপনে” অর্থাৎ করচ তিনি সাধ্যানুসারে গোপন করিয়া রাখিয়াছিলেন। সম্ভবতঃ এই জন্তই চৈতন্তচন্ত্রোদয় কৌমুদীতে দৃষ্ট হয় যে কেহ তাহার বাড়ী সম্বন্ধে প্রশ্ন করিলে তিনি বলিতেন ‘আমার বাড়ী উত্তর রাঢ় ।” অবশ্ব কাঞ্চন নগর উত্তর রাঢ়েরই অন্তর্গত, কিন্তু গ্রামের নাম ও আত্মপরিচয়ের Ü