8૨ গোবিন্দ দাসের করচা অনুল্লেখ দৃষ্টে যেন একটা সাবধানতা স্বচিত হইতেছে বলিয়াই মনে হয়। শশিমুখীর চরিত্রের যে পরিচয় এই করচায় পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে সে যদি জানিতে পারিত যে তাহার স্বামী পুরীতে আছেন, তবে সে বনজঙ্গল অতিক্রম করিয়া নিশ্চয়ই পুরীতে আসিত এবং মহাপ্রভুর মন দ্রব করির গোবিন্দদাসকে পুনরায় গ্রেপ্তার না করিয়া ফিরিত না । ক রচ এই ভাবে গোবিন্দ দাস “অতি সঙ্গোপনে” রাখিয়াছিলেন এবং সে কথা তিনি নিজেই বলিয়াছেন। বহুকাল পর্য্যস্ত এই পুস্তক গুপ্ত ছিল । এইজন্ত চৈতন্য ভাগবতকার, চৈতন্য চরিতামৃতকার প্রভূতি গ্রন্থকারের এই পুস্তক সম্বন্ধে কিছুই জানিতে পারেন নাই । কিন্তু তিনি যে মহাপ্রভুর বৈরাগ্যের সময় ও তাহার কিছু পূৰ্ব্বে র্তাহার সহচর ছিলেন এবং তাহার সঙ্গে দাক্ষিণাতে গিয়াছিলেন, একথা কয়েকখানি প্রাচীন গ্রন্থে পাওয় যাইতেছে। জয়ানন্দের চৈতন্ত্যমঙ্গলের বৈরাগ্যখণ্ডে চৈতন্য-সহচর গোবিন্দ কৰ্ম্মকারের নাম উল্লিখিত আছে, তাহ পূৰ্ব্বেই লিখিয়াছি। এই জয়ানন্দ মহাপ্রভূর সমসাময়িক ব্যক্তি। প্রায় ৩৭৫ শত বৎসর পূৰ্ব্বে প্রসিদ্ধ কবি বলরাম দাস তাহার এক পদে গোবিন্দকে সঙ্গে লইয়া যে চৈতন্ত দাক্ষিণাত্য গিয়াছিলেন তাহা অতি স্পষ্ট করিয়া লিখিয়াছেন ( গৌরপদতরঙ্গিনী ৪০৪ পৃ: ) ১৩৩২ সালের শ্রাবণের প্রবাসীতে ( ৪২১ পৃ: ) একজন বিজ্ঞানসঙ্গত প্রবন্ধ লেখক লিখিয়াছেন, বলরামদাস যখন মহাপ্রভুর দাক্ষিণাত্যে ভ্রমণের সহচর স্বরূপ গোবিনোর নাম উল্লেখ করিয়াছেন তখন অবশুই বিশ্বাস করিতে হইবে যে গোবিন্দ নামে কোন ব্যক্তি চৈতন্তদেবের সহিত তথায় গিয়াছিলেন । কিন্তু এই গোবিন্দই , যে দাক্ষিণাত্য ভ্রমণের ইতিহাস অর্থাৎ করচ, লিখিয়াছিলেন তাহার প্রমাণ কি ? ( অবশু করচার প্রতি পত্রেই লেখা আছে গোবিন্দ মহাপ্রভু দাক্ষিণাত্য ভ্রমণের সহচর ছিলেন ) এই প্রশ্নের বিজ্ঞান কিছুতেই বোধগম্য হইল না। এক হয় প্রশ্ন পড়িয়া আমার মাথা ঘোলাইয়া গিয়াছিল, নতুবা প্রশ্ন করার সময়ে প্রশ্নকৰ্ত্তার মাথা ঠিক ছিল না। এখন প্রাচীন গ্রন্থাদির সাক্ষ্যে প্রমাণিত হইল যে গোবিন্দ কৰ্ম্মকার নামক জনৈক ব্যক্তি চৈতন্তদেবের সঙ্গী ছিলেন এবং প্রভুর সহিত দাক্ষিণাত্য ভ্রমণ করিয়াছিলেন, এবং সেই ভ্রমণ-কাহিনীর সমস্ত কথাই করচাখানিতে পাওয়া যাইতেছে ; বিশিষ্ট ব্যক্তির সাক্ষ্য দিয়াছেন যে সেই করচার কীটদষ্ট জীর্ণ পুথি তাহারা দেখিয়াছিলেন। এখন প্রবাসীর লেখক বলিতেছেন যে কীটদষ্ট ও জীর্ণ হইলেই যে পুথি প্রাচীন তাহার প্রমাণ কি ? লেখক নিশ্চই অত্যন্ত বিজ্ঞান-সঙ্গত হইতে চেষ্টা পাইতেছেন, তাহার সাবধনতায় আমাদের হাসি পায়। কিন্তু রায়বাহাদুর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয় যিনি ৪০ বৎসরের উৰ্দ্ধকাল হইল জয়গোপাল গোস্বামীর নিকট এই পুথিখানি দেখিযাছিলেন, তিনি লিখিতেছেন ‘old’ offs offéla, “worn out condition' assis Afs à's Tool otă "ta উক্ত লেখক আবার গবেষণা-মূলক কি স্বগ্ন বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন করিবেন, তাহা ভাবিতে ভাবতই আতঙ্ক জন্মে।
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।