ভূমিকা (tన একরূপ। মিলাইয়া দেখিবার সুবিধার জন্য জে, সি ওয়াকার সাহেব কৃত এবং এ্যালবেমারল ষ্ট্রীট হইতে জন মারে কত্ত্বক প্রকাশিত ভারতবর্ষের মানচিত্ৰখানির উল্লেখ করিতেছি। প্রত্যেক মানচিত্রেই দেখা যায় ঘোঘা হইতে জাফরাবাদ ৭৭: মাইল “১৬০ মাইলের উপরে” নহে। আমরা পথের খুব সূক্ষ্ম হিসাব করিয়া মাইলের সংখ্যা নিৰ্দ্ধারণ করিয়াছি, ইহাতে ভুলের কোন আশঙ্কা নাই। সুতরাং ঘোঘা হইতে জাফরাবাদ তাহারা দৈনিক ২৫ মাইল হিসাবে গিয়াছিলেন। গোবিন্দদাস লিখিয়াছেন এই পথটা তাহারা তিনদিনে বহুকষ্টে উত্তীর্ণ হন । বহুকষ্টের কারণও মানচিত্র দেখিলে অনুমান করা যায় । ঘোঘা এবং জাফরবাদের মধ্যে গ্রাম কি নগর বিশেষ কিছু দেখা যায় না। সুতরাং লোকালয়বিরহিত পাৰ্ব্বত্য স্থানটি খুব তাড়াতাড়ি অতিক্ৰম করিতে হইয়াছিল। অবশ্য ২৫ মাইল রাস্তা দৈনিক হাট কিছু বৃহৎ ব্যাপার নহে। লেখক ৭৭; মাইলকে ১৬০ মাইলের উপরে পরিকল্পনা করাতে ঠাহার উদ্দেশু সফল হয় বটে, কিন্তু সত্যের ঘোরতর অপলাপ করা হয়। জাফরাবাদ হইতে সোমনাথ মানচিত্রে ৬১, মাইল । স্বচ্ছন্দ মনে ভাল করিয়া সমস্ত দৃশ্ব দেপিতে দেখিতে গেলে এই ৬০, মাইল যাইতে ৬ দিন কেন, ১৫ দিন ও লাগিতে পারে। বিশেষ তৎপূৰ্ব্বে প্রত্যহ ২৫ মাইল বহুকষ্টে পর্যটন করার পরে পথ-ভ্রমণে অবসাদ আসা স্বাভাবিকই বটে। আটাচুণা লইয়া বিবাদ ত্রিবাঙ্কুর ও কাবেরীর তীরে চৈতন্যপ্ৰভু আটাচুণা ভিক্ষা পাইয়াছিলেন, ইহা অসম্ভব কথা বলিয়া প্রবাসীর লেখক নানারূপ কুটতর্ক উত্থাপিত করিয়াছেন। তিনি বলেন ঐদেশে আটাচুণা পাওয়া যায় না। “একমাত্র এই দোষেই করচাকে অনৈতিহাসিক ও কাল্পনিক বলা যাইতে পারে।” তাহার যুক্তিগুলি নিজের নিকট এতই দৃঢ় বোধ হইতেছে যে বহু স্থলে তিনি ঐরুপ কথা ব্যবহার করিয়াছেন। কিন্তু “ঘোগ হইতে জাফরাবাদ ১৬০ মাইলের উপর এই সিদ্ধান্তের ন্যায় আটাচুণার কথাটা ও অসার। দক্ষিণ মালাবার পালঘাটবাসী অধ্যাপক রাও বাহাদুর অনস্তকৃষ্ণ আয়ারের নিকট আমরা প্রশ্ন করিয়াছিলাম। তাহার বাড়ী হইতে একদিনে ত্রিবাঙ্কুর হাটিয়া যাওয়া যায়, সুতরাং সেদিককার সকল কথাই তিনি বিশেষরূপে অবগত আছেন। ১৫১০ খৃঃ অব্দে কি তন্নিকট সময়ে তাহাদের দেশে আটাচুণা পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কিনা, এই ছিল আমার প্রশ্ন। তিনি বলিলেন “চালের গুড়া, ময়দা, ভাজা কলাই মুর্টির গুড়া, এই তিন দ্রব্যের মিশ্রনে যে খাদ্য প্রস্তুত হইয়া থাকে তাহা আমাদের দেশে আটাচুণা বলিয়া পরিচিত। ত্রিবাস্তুর অঞ্চলের খাটি দেশবাসী লোকেরা প্রাচীন কালে ইহা খাইতেন এবং এখনও খাইয়া থাকেন। চিনি ও গুড় দিয়া জলে গুলিয়া ইহা খাইতে হয়। প্রবাস-যাত্রার সময় ইহাই অবলম্বন।” রাও বাহাদুর
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৬৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।