ভূমিকা ৬৯ এবং ইহার শিকর এতটা নীচে নামিয়াছে, যে কতগুলি অমূলক কথায় বলে এখন ইহাকে খারিজ করিয়া ফেলা একরূপ অসাধ্য-সাধন । শুধু আমাকে লইয়া নহে, বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের অবর্জন দূর করিবার জন্য যাহারা বদ্ধ-পরিকর হইয়াছেন, তাহারা ডাক্তার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়কেও চিঠি পত্র লিখিয়া ব্যতিবস্ত করিয়া তুলিয়াছেন। ১৯২৬ সনের ২৪শে ফেব্রুয়ারী তারিখে পল্লীবাসী পত্রিকায় ডাক্তার রবীন্দ্র নাথ বৈষ্ণবধৰ্ম্মে যে আঘাত করিয়াছেন তৎসম্বন্ধে লিখিত হইয়াছে “সমাজের প্রধান ব্যক্তি গণ প্রাচীন ধারা ধরিতে না পারিয়া নানা ভুল করিয়া বৰ্ত্তমান সকল বিভাগের যে ভীষণ বিপ্লব আনয়ন করিয়াছেন, তাহ চিন্তা করিলেও হৃৎকম্প হয়।” রবীন্দ্ৰঠাকুর মহাশয়কে ইহার ৬ই শ্রাবণ (১৩৩১) যে শেয চিঠি লিখিয়াছেন, তাঙ্গ উক্ত পল্লীবাসীতে প্রকাশিত হইয়াছে। গীতাঞ্জলী হইতে কয়েকটি পদ উদ্ধৃত করিয়৷ ইহঁারা তাহাকে লিখিয়াছেন “উপরোক্ত ভাবে বৈষ্ণবের মৰ্ম্ম নিয়া ছিনিমিনি খেলা কতদূর শোভা পাইয়াছে, সে সম্বন্ধে আপনার শেষ কথা আমাদের জানা আবশ্ব্যক ৷” এই মহা বিচারশালার নিকট কৈফিয়ৎ দিতে যাইয়া কবিবরের হৃৎকম্প উপস্থিত হইবার কথা। বিশ্বকোধের নগেন্দ্রনাথ বসু মহাশয়ের উপরও নিৰ্য্যাতন চলিতেছে। ১৯২৬ সনের ২৪শে ফেব্রুয়ারীর পল্লীবাসীতে প্রকাশ, তাহার উপর আর একখানি পরওয়ানা জারি হইয়াছে—তাহার একটি স্থান উদ্ধৃত করিতেছি :–“বিশ্বকোষ নামক অভিধানে শ্ৰীশ্ৰীচৈতন্তামৃতকার শ্ৰীলকৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী প্ৰভু ও প্রাচীন পদকর্তাগণ এবং আচাৰ্য্যগণের নিষ্কলঙ্ক চরিত্রে আপনি সহজিয়া ভাব আরোপ করিয়াছেন।” ২২শে মে (১৯২৫) তারিখের অমৃতবাজার পত্রিকায় প্রকাশ যে বৈষ্ণব কুলগুরু শ্ৰীখণ্ডের সুপ্রসিদ্ধ নরহরি ঠাকুর প্রভুর মত লইয়া তদ্বংশীষ শ্ৰীযুক্তরাখালানন্দ ঠাকুরের উপর সহজিয়া দোষ আরোপ পূৰ্ব্বক আক্রমণ করা হইয়াছে। ইহা ছাড়া বৈষ্ণব সাহিত্যের মুকুটমণি সুপ্রসিদ্ধ ভক্তিরত্নাকর, জয়ানন্দের চৈতন্ত-মঙ্গল এবং নিত্যানদের প্রেমবিলাস প্রভৃতি বিখ্যাত প্রাচীন গ্রন্থগুলি সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্ত, এইরূপ আন্দোলনও ইহঁরা করিতেছেন। মহাপ্রভুকে ইহঁারা ইচ্ছামত মোমের পুতুলের মত গড়িয়া রাখিয়াছেন, পাছে কোনরূপ হাওয়া লাগিয়া সেই বিগ্রহ গলিয়া পড়ে, এইজন্ত সৰ্ব্বপ্রকার সাবধানতা অবলম্বন করিয়া তাহাদের অরাধ্যের মুরূবিয়ানা করিতেছেন। ১৩৩২ সালের ৬ই চৈত্রের গৌড়ীয় পত্রিকায় কোন পত্র প্রেরক লিখিয়াছেন “ডাক্তার দীনেশ বাবু গদ্যে এবং ডাক্তার রবীন্দ্র নাথ গদ্যে পদ্যে বৈষ্ণব নামের কোন সার্থক ভাব করেন নাই।” কিন্তু ডাঃ রবীন্দ্ৰ নাথ এবং এই দীন লেখক যে বৈষ্ণব, এমন প্রমাণ ইহঁারা কোথায় পাইলেন ? বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের আবর্জন দূর করিতে যাইয়া ইহঁারা যখন গীতাঞ্জলী হইতে ভক্তিরত্নাকর, বিশ্বকোষ প্রভূতি অনেক পুস্তকের উপর নোটিস দিয়া বসিয়াছেন, তখন করচ অবগু সৎসঙ্গে
পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।