ԳՀ গোবিন্দ দাসের করচা করিয়া ছিলেন তখন শশিমুখী একবার গোবিন্দকে পাকড়াও করিয়াছিল। যদিও মহাপ্রভূ শশিমুখীকে নিবৃত্তি করিতে চেষ্ট পাইয়াছিলেন, তথাপি তাহার কান্না কাটিতে আর্দ্র হইয়া তিনি শেষে গোবিন্দকে গৃহে ফিরিয়া যাইতে আদেশ করেন। কিন্তু চৈতন্যদেব প্রস্থান করিলে গোবিন্দ সে আদেশ লঙ্ঘন পূর্বক আত্মীয়গণের অনুরোধ উপরোধ অগ্রাহ করিয়া ছুটিতে ছুটিতে প্রভুর পশ্চাৎ পশ্চাৎ অনুগমন করেন। আমাদের মনে হয় আবার পাছে শশিমুখীর পাল্লায় পড়েন এবং মহাপ্রভু তাহাকে গৃহে ফিরিতে বাধ্য করেন, এই ভয়ে তিনি করচাখানি সম্পূর্ণ রূপে গোপন করিয়াছিলেন (“করচা করিয়া রাখি অতি সঙ্গোপণে,” (৬২ পৃ: ) অর্থাৎ করচ তিনি কাহাকেও দেখিতে দেন নাই । এখন করচায় পাওয়া যাইতেছে যে চৈতন্তদেব পুরীতে ফিরিয়া একখানি পত্রসহ গোবিন্দকে শান্তিপুর বাইতে আদেশ করেন। কিন্তু তাহার একান্ত ভক্ত অনুচরটি কয়েকটি দিনের বিরহ ভাবিয়া কাদিয়া আকুল হইয়াছিলেন ( “এই বাক্য শুনি মোর চক্ষে বারি বহে। প্রভূর বিরহ বাণ প্রাণে নাহি সহে ॥” ৮৬ পৃ: ) এই কান্নার আর একটি কারণ ছিল,—বঙ্গদেশে গেলে শশিমুখী পাছে তাহাকে ফিরাইয়া লইবার চেষ্টা করে,—তিনিতে মহাপ্রভূ-গর্ত প্রাণ, র্তাহাকে ছাড়া তিনি ‘কায়াছাড়া ছায়া । এইখানে করচা শেষ হইয়া গেল। ইহার পর করচায় আর কোন বিবরণ ছিল কিনা, তাহ বলা যায় না। কারণ পুথিখানি খণ্ডিতও হইতে পারে। কিন্তু একথা নিশ্চয় যে অতঃপর যদি গোবিন্দের বজ্রাঘাতে হঠাৎ মৃত্যু না হইয়া থাকে, তবে তিনি মহাপ্রভুকে ছাড়িয়া থাকিতে পারেন নাই। যে ব্যক্তি দুদিনের বিরহ আশঙ্কায় আকুল হইয়াছিলেন এবং মহাপ্রভুর আদেশ লঙ্ঘন পূৰ্ব্বক স্ত্রীর নিকট হইতে উৰ্দ্ধশ্বাসে পালাইয়া ছায়ার মত র্তাহার অনুকরণ করিয়া জীবন ধন্ত করিয়া ছিলেন, তিনি জীবিত থাকিলে কখন ও মহাপ্রকে ছাড়িয়া যাইতে পারেন নাই। অতঃপর তাহার সম্বহ্মে যে বিবরণ পাওয়া গিয়াছে বলিয়া আমার ৰিশ্বাস তাহা নিম্নে প্রদত্ত হইল । চৈতন্ত চন্দ্রোদয় কৌমুদী নামক প্রেমদাস রচিত একখানি প্রাচীন পুথি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালায় আছে, একথা পূর্বেই লিখিয়াছি। এই পুথিখানি মূলতঃ কবি কর্ণপুরের চৈতন্যচন্দ্রোদয় নাটক অবলম্বন করিয়া রচিত হইলেও কোন কোন আবাস্তর কথা ইহাতে আছে। এই পুথির ১৪৮ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে মহাপ্রভুর দাক্ষিনাত্য হইতে প্রত্যাগমনের পর গোবিন্দ দাস নামক এক ব্যক্তি শ্ৰীখণ্ডে উপস্থিত হন। এই ব্যাক্তি যে শূদ্র তাহার আভাষ ও পুথিতে আছে - ইনি নিজের বিষয় অত্যস্ত গোপন করিয়া চলিতেছেন, এরূপ বুঝাযায়। তাহার
- *নরহরি দাস আদি যত ভক্তগণ ।
ড়িহ আলি তা সভার বন্দিলা চরণ ॥