পাতা:গৌড়রাজমালা.djvu/৬৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কাম্বোজান্বয়-গৌড়পতি।

 যে স্থানে মহীপালের তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইয়াছে, দীনাজপুর জেলার অন্তর্গত সেই বাণগড় বা বাণনগরের বিশাল ভগ্নস্তূপ হইতে সংগৃহীত এবং দীনাজপুর রাজবাড়ীর উদ্যানে পরিরক্ষিত একটি প্রস্তরস্তম্ভের পাদদেশে উৎকীর্ণ রহিয়াছে—

१। 

दुर्ब्बारारि-वरूथिनी-प्रमथने दाने च विद्याधरैः
सानन्दं दिवि।
२।  यस्य मार्ग्गण-गुण-ग्रामग्रहो गीयते।
काम्वोजान्वयजेन गौड़पति-
३।  ना तेनेन्दुमौले रयं
प्रासादो निरमायि कुञ्जरघटा-वर्षेण भू-भूषणः॥

 “আনন্দে বিদ্যাধরগণ স্বৰ্গলোকে যাঁহার দুর্দ্দমনীয়-শত্রুসৈন্য-দমনে দক্ষতা এবং দানকালে যাচকের গুণগ্রাহিতার বিষয় গান করিতেছেন, কাম্বোজান্বয়জ সেই গৌড়পতি কুঞ্জরঘটা (৮৮৮) বর্ষে ইন্দুমৌলির (শিবের) এই পৃথিবীর ভূষণ মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন।”

 এই শ্লোকটিতে যে ঐতিহাসিক তথ্য নিবদ্ধ রহিয়াছে, তাহার আলোচনার পূর্ব্বে, সংক্ষেপে এই শ্লোকের ব্যাখ্যার ইতিহাস বলা আবশ্যক। দিনাজপুরের তখনকার কালেক্‌টর ওয়েষ্টমেকট্ এই শ্লোকের পাঠোদ্ধার করিয়া, রাজেন্দ্রলাল মিত্র-কৃত অনুবাদ সহ, ১৮৭২ খৃষ্টাব্দের “ইণ্ডিয়ান্ অ্যাণ্টিকোয়েরি” পত্রে ইহা প্রকাশিত করিয়াছিলেন।[১] ওয়েষ্টমেকটের প্রবন্ধের সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তার ভাণ্ডারকর-কৃত একটি প্রতিবাদও প্রকাশিত হইয়াছিল। রাজেন্দ্রলাল এই প্রতিবাদের উত্তর প্রদান করিয়াছিলেন;[২] এবং ভাণ্ডারকর তাহারও প্রত্যুত্তর প্রকাশিত করিয়াছিলেন।[৩] ১২৮৮ বঙ্গাব্দের “বান্ধব”-পত্রে এক জন লেখক, পুনরায় রাজেন্দ্রলালের ব্যাখ্যার প্রতিবাদ করিয়াছিলেন।[৪] ইহার পর, এই লিপির কথা পণ্ডিতগণ একেবারে ভুলিয়া গিয়াছিলেন। কিল্‌হর্ণ “এপিগ্রাফিয়া ইণ্ডিকা” পত্রের পঞ্চম খণ্ডের পরিশিষ্টে উত্তরাপথের (Northern India) প্রাচীন লিপিসমূহের যে তালিকা প্রদান করিয়া গিয়াছেন, তাহাতে এই লিপির নামগন্ধ নাই। বাঙ্গালার প্রত্নতত্ত্বানুসন্ধান-বিভাগের ভূতপূর্ব্ব অধ্যক্ষ ডাক্তার ব্লক ১৯০০-১ খৃষ্টাব্দের রিপোর্টে অতি সংক্ষেপে এই লিপির উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু তিনি ভ্রমক্রমে “গৌড়পতি”কে “সীদপতি” পাঠ করায়, তাঁহার ব্যাখ্যা ব্যর্থ হইয়া গিয়াছে।

  1. ১২৭-১২৮ পৃঃ।
  2. ঐ ১৯৫ পৃঃ।
  3. ঐ ২২৭ পৃঃ।
  4. ১৮০-১৮২ পৃঃ।

৩৫