পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যাইতে পারে, তাহার প্রকৃত মর্ম্ম অবগত হইবার পক্ষেও এই সকল প্রাচীন লিপি প্রধান অবলম্বন বলিয়া পরিচিত হইয়াছে।[১]
এই সকল পুরাতন লিপি একত্র সঙ্কলিত না হইলে, লিপি-লিখিত সকল বিবরণের প্রকৃত মর্ম্ম হৃদয়ঙ্গম হয় না। এক এক যুগের বহুসংখ্যক প্রাচীন লিপি এক সঙ্গে অধ্যয়ন করিতে পারিলে, সেই সেই যুগের নানা বিবরণের প্রকৃত মর্ম্ম সহজে উদঘাটিত হইয়া পড়ে;—এক লিপি অন্য লিপির পাঠোদ্ধারের ও ব্যাখ্যাসাধনেরও সহায়তা সাধন করিতে পারে। যে লিপি স্বতন্ত্রভাবে আলোচিত হইবার সময়ে অকিঞ্চিৎকর বলিয়া প্রতিভাত হয়, কালক্রমে অন্য লিপির আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে, তাহার ঐতিহাসিক মর্য্যাদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইতে পারে। অনেকবার ইহার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে।
বাঙ্গালার ইতিহাসের সহিত কেবল বাঙ্গালা দেশের চতুঃসীমার সম্বন্ধই একমাত্র সম্বন্ধ বলিয়া কথিত হইতে পারে না। ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশের সহিত, এবং ভারতসীমার বাহিরেও নানা স্থানের সহিত বাঙ্গালার ইতিহাসের নানা সম্বন্ধ বর্ত্তমান ছিল। প্রাচীন লিপি হইতে তাহার সন্ধানলাভ করিতে হইলে, বহুসংখ্যক প্রাচীন লিপি একত্র সঙ্কলিত করিতে হইবে। তাহা বহু শ্রমসাধ্য এবং বহু ব্যয়সাধ্য কঠিন ব্যাপার। প্রথমে তাহাতে হস্তক্ষেপ না করিয়া, বাঙ্গালার রাজবংশনিচয়ের শাসন-সময়ে যে সকল লিপি উৎকীর্ণ হইয়াছিল, তাহাই একত্র সঙ্কলিত হইতেছে।
এই সকল প্রাচীন লিপি হইতে কোন্ কোন্ শ্রেণীর ঐতিহাসিক তথ্যের সন্ধান লাভ করা যাইতে পারে, তাহাই অনুসন্ধানের মুখ্য বিষয়। তাহার সংখ্যা নিতান্ত অল্প হইবে না। কিন্তু আমাদের দেশের ঐতিহাসিক তথ্যানুসন্ধানের প্রথম যুগে, রাজার এবং রাজবংশের পরিচয় সংগ্রহের আকাঙ্ক্ষা সমধিক প্রবল থাকায়, এ পর্য্যন্ত কেবল তাহার কথাই পুনঃ পুনঃ আলোচিত হইয়া আসিতেছে। তজ্জন্য প্রাচীন লিপি-নিহিত অন্যান্য তথ্যের যথাযোগ্য আলোচনার প্রয়োজন অনুভূত হইতে পারে নাই। এখন তাহাতে হস্তক্ষেপ করিবার সময় উপস্থিত হইয়াছে।
যে সকল প্রাচীন লিপি সংস্কৃত ভাষায় বিরচিত, তন্মধ্যে কোন কোন লিপি রচনা-মাধুর্য্যে সংস্কৃত কাব্য-শাস্ত্রে উচ্চ স্থান অধিকার করিবার যোগ্য বলিয়াও কথিত হইতে পারে। ভাষার এবং রচনা-পারিপাট্যের প্রতি লক্ষ্য করিলে বুঝিতে পারা যায়, জনসমাজের কথোপকথনের
- ↑ Rich as have been their bequests to us in other lines, the Hindus have not transmitted to us any historical works which can be accepted as reliable for any early times. And it is almost entirely from a patient examination of the inscriptions, the start in which was made more than a century ago, that our knowledge of the ancient political history of India has been derived. But we are also ultimately dependant on the inscriptions in every other lime of Indian research. Hardly any defenite dates and identifications can be established except from them. And they regulate everything that we can learn from tradition, literature, coins, art, architecture, or any other source.—J. F. Fleat in the Imperial Gazetteer of India, Vol. II.
৫