লেখমালা।
তাহার ক্রমবিকাশের পরিচয় প্রাচীন লেখমালায় সন্নিবিষ্ট থাকিয়া, অল্প-সংখ্যক সাহিত্যিকের আলোচনার বিষয় হইয়া রহিয়াছে। বঙ্গ-লিপি কত পুরাতন, তাহার সীমানির্দ্দেশের উপযোগী লিখিত প্রমাণ অধিক আবিষ্কৃত হয় নাই। যাহা কিছু আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহা বঙ্গ-লিপিকে একটি পুরাতন প্রাদেশিক লিপি বলিয়াই পরিচয় প্রদান করিতেছে। দৃষ্টান্তস্থলে কোন কোন শিলালিপির আদর্শ মুদ্রিত হইল। যে সকল পুরাতন লিপি সঙ্কলিত হইল, তাহার আবিষ্কার-কাহিনী, পাঠোদ্ধার-কাহিনী, ব্যাখ্যা-কাহিনী, লিপি-পরিচয় ও লিপি-বিবরণী-সংযুক্ত ভূমিকাসহ মূলানুগত পাঠ, এবং বঙ্গানুবাদ প্রদত্ত হইল। বিশুদ্ধ মূলানুগত পাঠ সঙ্কলিত করিবার অন্তরায়ের অভাব নাই। সকল লিপি একস্থানে সুরক্ষিত হইতেছে না; কোন কোন লিপি নিতান্ত জরাজীর্ণ; এবং একখানি লিপি এখন আর সন্ধান করিয়াও বাহির করিবার উপায় নাই; তাহা আবিষ্কৃত হইবার পর, আবার লোকলোচনের অতীত হইয়া পড়িয়াছে! এই সকল প্রাচীন লিপির অনুবাদ-কার্য্য বিলক্ষণ আয়াস-সাধ্য ব্যাপার; যত্ন চেষ্টার অভাব না থাকিলেও, ইহাতে পদে পদে বিড়ম্বিত হইবার আশঙ্কা আছে। কেহ কেহ তজ্জন্য নানা মনঃকল্পিত ব্যাখ্যার অবতারণা করিয়া গিয়াছেন। এইরূপে যে সকল ব্যাখ্যা সূচিত হইয়া, সুধীসমাজে প্রকৃত ব্যাখ্যা বলিয়া প্রচলিত হইয়াছে, তাহার যথাযোগ্য সমালোচনা প্রচলিত হয় নাই। তজ্জন্য অনেক মনঃকল্পিত পাঠ ও ব্যাখ্যা সাহিত্যে পুনঃ পুনঃ উদ্ধৃত হইতেছে। যথাস্থানে তাহার পরিচয় প্রকাশিত হইবে। প্রাচীন লিপির সঙ্কলন ও তাহার ব্যাখ্যাসাধন এরূপ শ্রমসাধ্য কঠিন ব্যাপার যে তাহাতে ভ্রম-ত্রুটি পরিলক্ষিত হইবার আশঙ্কা সম্পূর্ণরূপে দূরীভূত হয় না। তৎসম্বন্ধে নিবেদন—
“शोध्योऽयं करुणावद्भिः कृतिभि र्मे परिश्रमः।”
৮