লেখমালা।
(১৫)
ইঁহার উৎকৃষ্ট-রণযাত্রা-কালে, আকাশ-তল ধূলিপটলে[১] [বালুকাকীর্ণ] যজ্ঞ-স্থলের[২] অবস্থা প্রাপ্ত হইলে, [তাহার উপর দিয়া রথাকর্ষণ করিতে] সূর্য্যাশ্বগণের[৩] পদবিন্যাস-শ্রম উপস্থিত হইত। [কিঞ্চ] ইন্দ্রদেব তাঁহার দুইটি হস্তের দ্বারা [দুইটি] চক্ষু আবৃত করিয়া, [হস্তের দ্বারা] অন্য কার্য্য করিতে অসমর্থ হইয়া, তাঁহার [দেব] নয়নের অনিমীলনকর[৪] স্বকর্ম্ম-[ফলের] নিন্দা করিয়া থাকেন।
(১৬)
[অরণি-রূপে[৫] ব্যবহৃত] বাহুদণ্ড-সংঘর্ষণোৎপন্ন, [ইন্ধন-রূপে[৬] ব্যবহৃত] শত্রুসেনা-শরীর-সন্দীপিত, রণ-পূজিত হোমাগ্নি-মধ্যে [শ্রীফল-রূপে[৭] ব্যবহৃত] রিপুশিরঃ-সমূহে হোম-বিধির অনুষ্ঠান করিয়া, [পূর্ণাহুতি-রূপে ব্যবহৃত] শত্রু-নরপালের নিধনসাধন এবং [যজ্ঞফল-রূপে উপার্জ্জিত] যশোলাভ করিয়া, এই বৈদ্যদেব দীপ্তিলাভ করিয়াছিলেন।
(১৭)
সেই ভীষণ সমর-ক্ষেত্রের ভিতর হইতে খড়্গাঘাতে উৎপতনশীল রিপুশিরঃ-সমূহে গগন-মণ্ডল
- ↑ এই শ্লোকের “উৎকর”-শব্দ অমরকোষে [২।৫।৪২] “पुञ्जराशीतूत्करः” বলিয়া ব্যাখ্যাত। তদ্বারা ধান্যাদি স্তূপীকৃত পদার্থের রাশি বুঝায়। কবিগুরু [রামায়ণে] এই শব্দের ব্যবহার করিয়া গিয়াছেন। যথা,—
“सिक्त-राजपथान् रम्यान् प्रकीर्ण-कुसुमोत्करान्।”
- ↑ “স্থণ্ডিল”-শব্দ সুপরিচিত। অমরকোষে [২।৭।১৮) “समे स्थण्डिल-चत्वरे” বলিয়া, এবং শব্দরত্নাবলীতে
“यज्ञे परिष्कृतस्थाने स्यातां स्थण्डिल-चत्वरे।”
বলিয়া, তাহার ব্যাখ্যা দেখিতে পাওয়া যায়। সেকালে বরেন্দ্র-মণ্ডলে তান্ত্রিকাচার প্রবল থাকিলেও, “স্থণ্ডিলের” ব্যবহার অক্ষুণ্ণ ছিল। শারদা-তিলকে তাহার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। যথা,—
“नित्यं नैमित्तिकं काम्यं स्थण्डिले वा समाचरेत्।”
- ↑ “সপ্তিক”-শব্দের অর্থ—অশ্ব।
- ↑ দেব-চক্ষু স্পন্দন-রহিত বলিয়া যে প্রসিদ্ধি আছে, তদবলম্বনে এই শ্লোক রচিত হইয়াছে।
- ↑ অগ্নিমন্থন-কাষ্ঠের নাম “অরণি”। তজ্জন্য এখানে বাহু-সংঘর্ষণ অরণি-সংঘর্ষণ-রূপে কল্পিত হইয়াছে। এই শ্রেণীর আর একটি কবি-কল্পনা “ধনঞ্জয়-বিজয়ে” দেখিতে পাওয়া যায়। যথা,—
विपक्ष-वक्षोऽरणि-मन्थनोत्थः
प्रताप-वह्ने रिव धूम-लेखा।” - ↑ অগ্নি-সন্দীপক তৃণকাষ্ঠাদি সমস্তই “ইন্ধন” নামে কথিত হইবার যোগ্য হইলেও, এখানে [ভটব্রাত] সেনা-সমূহই যজ্ঞাগ্নি-সন্দীপক “সমিৎ”রূপে কল্পিত হইয়াছে।
- ↑ হোম-কর্ম্মে ব্যবহার্য্য ফলের মধ্যে শ্রীফলের কথাও [তন্ত্রসারে] উল্লিখিত আছে। এই কল্পনায় আরও একটি তথ্য ধ্বনিত হইয়া থাকিতে পারে। শ্রীফলের দ্বারা হোম করিতে হইলে, তাহাকে তিন ভাগে বিভক্ত করিবার ব্যবস্থা আছে। যথা,—
“त्रिधाकृतं फलं विल्वम्।”
১৪২