ধর্ম্মপালদেবের তাম্রশাসন।
[খালিমপুর-লিপি]
প্রশস্তি-পরিচয়।
মালদহ জেলার অন্তর্গত খালিমপুর গ্রামের উত্তরাংশে হলকর্ষণ করিতে গিয়া, এক কৃষক এই তাম্রপট্টলিপি প্রাপ্ত হইয়াছিল। সে ইহাকে সিন্দূর লিপ্ত করিয়া, আমরণ পূজা করিয়াছিল;আবিষ্কার-কাহিনী।—কাহাকেও দান বা বিক্রয় করিতে সম্মত হয় নাই। পরলোকগত উমেশচন্দ্র বটব্যাল, এম, এ, মহোদয় মালদহের কলেক্টর হইয়া আসিবার পর, এই সমাচার অবগত হইয়া, ১৮৯৩ খৃষ্টাব্দে কৃষক-পত্নীর নিকট হইতে তাম্রপট্টখানি ক্রয় করিয়া লইলে, ইহার কথা সুধীসমাজে সুপরিচিত হইবার সূত্রপাত হয়। ইহা পালবংশীয় দ্বিতীয় নরপাল ধর্ম্মপালদেবের ভূমিদানের তাম্রশাসন;—খালিমপুরে আবিষ্কৃত হইয়াছিল বলিয়া, এক্ষণে “খালিমপুর-লিপি” নামে কথিত হইয়া আসিতেছে।
এই তাম্রশাসনখানি ক্রয় করিবার পর, বটব্যাল মহাশয় ইহার পাঠোদ্ধারে ব্যাপৃত হইয়াছিলেন। তৎকালে তাঁহার উদ্ধৃত পাঠে অনেক অসঙ্গতি এবং ভ্রমপ্রমাদ বর্ত্তমান থাকিলেও,পাঠোদ্ধার-কাহিনী। তাহাই এসিয়াটিক্ সোসাটীর পত্রিকায়[১] প্রকাশিত হইয়াছিল। পরে পরলোকগত অধ্যাপক কিল্হর্ণ বহুযত্নে একটি বিশুদ্ধ পাঠ প্রকাশিত করিয়া গিয়াছেন।[২] কিন্তু বটব্যাল মহাশয়ের ভ্রমপ্রমাদপূর্ণ পাঠই এখনও সময়ে সময়ে অন্যান্য লেখকের গ্রন্থে উদ্ধৃত হইতেছে। ষষ্ঠ শ্লোকের প্রথম চরণে লিখিত আছে—
“ताभ्यां श्रीधर्म्मपालः समजनि सुजन-स्तूयमानावदानः।”
বটব্যাল মহাশয় ধর্ম্মপালের सुजन-स्तूयमानावदान: বিশেষণ-পদটি “सुजन-स्तूपमानावदानः” বলিয়া উদ্ধৃত করিয়াছিলেন। ১৮৯৪ খৃষ্টাব্দে এই পাঠ মুদ্রিত হয়। ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দে অধ্যাপক
- ↑ J. A. S. B. Vol. LXIII, Part I, p. 39.
- ↑ Epigraphia Indica, Vol. IV, p. 243. অধ্যাপক কিল্হর্ণ যে সকল তাম্রশাসনের পাঠ ও ব্যাখ্যা প্রকাশিত করিয়া গিয়াছেন, তাহাতে তাঁহার প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য চিরস্মরণীয় হইয়া রহিবে। উত্তরকালে যাঁহারা এই কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতেছেন বা করিবেন, তাঁহাদিগকে মুক্তকণ্ঠে পরলোকগত অধ্যাপক মহাশয়ের নিকট নানা বিষয়ে ঋণ স্বীকার করিতে হইবে। এই লেখমালা সঙ্কলন করিবার সময়ে তাঁহার প্রকাশিত পাঠ ও ব্যাখ্যা অনেক স্থলেই পথপ্রদর্শকরূপে প্রভূত উপকার সাধন করিয়াছে। যেখানে মত-পার্থক্য ঘটিয়াছে, সেই সকল স্থলে অধ্যাপক কিল্হর্ণের ব্যাখ্যা বা মন্তব্য উদ্ধৃত এবং আলোচিত হইয়াছে।
৯