সম্পাদকের নিবেদন।
গৌড়লেখমালা তিনটি স্তবকে তিন অংশে প্রকাশিত হইবে। প্রথম স্তবকে পাল-নরপালগণের তাম্রশাসন ও তাঁহাদিগের শাসন-সময়ের কতিপয় শিলালিপি প্রকাশিত হইল। দ্বিতীয় স্তবকে তাঁহাদিগের শাসন-সময়ের অন্যান্য লিপি এবং বর্ম্ম-রাজগণের ও সেন-রাজগণের লিপি প্রকাশিত হইবে। তৃতীয় স্তবকে পাঠান-সুলতানগণের শাসন-সময়ের যে সকল লিপি সন্নিবিষ্ট হইবে, অধ্যাপক গোলাম ইয়াজদানী এম-এ, মহাশয় তাহার সঙ্কলন-ভার গ্রহণ করিয়াছেন। গৌড়লেখমালা-সঙ্কলনে, উদ্ধৃত পাঠের ও ব্যাখ্যার পরীক্ষাকার্য্যে, এবং পাদ-টীকায় উল্লিখিত প্রমাণাবলীর অনুসন্ধানে অধ্যাপক শ্রীশচন্দ্র শাস্ত্রী বি-এ, অধ্যাপক গিরিশচন্দ্র বেদান্ততীর্থ, অধ্যাপক রাধাগোবিন্দ বসাক এম-এ, অধ্যাপক রমাপ্রসাদ চন্দ বি-এ, ও শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র সিদ্ধান্তভূষণ সময়ে সময়ে সম্পাদকের সহায়তা-সাধন না করিলে, এই শ্রমসাধ্য কার্য্য অল্প সময়ে এতদূর অগ্রসর হইতে পারিত না। গৌড়লেখমালা-সঙ্কলনে প্রবৃত্ত হইয়া, অনেক লিপির অনেক স্থানের পূর্ব্বপ্রচলিত পাঠের ও ব্যাখ্যার পুনরালোচনা করিতে হইয়াছে। যে সকল স্থলে রাজেন্দ্রলাল, উমেশচন্দ্র, হরপ্রসাদ, নগেন্দ্রনাথ, মনোমোহন প্রমুখ স্বদেশের সুবিখ্যাত পুরাতত্ত্ববিশারদগণের এবং উইল্কিন্স, কোলব্রুক্, কিল্হর্ণ, হর্ণলি, হুল্জ্, ভিনিস্ প্রমুখ বিদেশের ভুবনবিখ্যাত মনীষিগণের সম্পাদিত পাঠ ও ব্যাখ্যা গৃহীত হইতে পারে নাই, তাহার কারণ ও প্রমাণ বিস্তৃতভাবে উল্লিখিত হইয়াছে; এবং যে সকল গ্রন্থ হইতে প্রমাণাদি সঙ্কলিত হইয়াছে, যথাস্থানে তাহারও পরিচয় সন্নিবিষ্ট হইয়াছে। এরূপ গ্রন্থ প্রকাশের এই প্রথম প্রয়াসে বঙ্গসাহিত্যের কিছুমাত্র উপকার সাধিত হইলেও, সকল শ্রম সফল হইবে। অলমতি বিস্তরেণ।