পাতা:গৌড়লেখমালা (প্রথম স্তবক).djvu/৫৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

লেখমালা।

রণকুঞ্জরগণ ভ্রমণ করিতে করিতে বিন্ধ্যগিরিতে[১] উপনীত হইয়া, আনন্দাশ্রু-প্রবাহ-প্লাবিত বন্ধুগণকে পুনরায় দর্শন করিয়াছিল; এবং যুবক অশ্বগণও কাম্বোজ দেশে উপনীত হইয়া দীর্ঘকালের পর স্বকীয়-হৰ্ষসম্ভূত-হ্রেষারবমিশ্রিত-হ্রেষারবকারী প্রিয়তমাবৃন্দের দর্শন লাভ করিয়াছিল।

(১৪)

 সত্য যুগে যে দানপথ বলিরাজা কর্ত্তৃক আবিষ্কৃত হইয়াছিল, ত্রেতাযুগে যে দানপথে ভার্গব অগ্রসর হইয়াছিলেন, দ্বাপরে কর্ণ যাহার অনুসরণ করিতেন,[২] কালক্রমে বিক্রমাদিত্যের[৩] তিরোভাবে যে দানপথ কলি-তাড়নে বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িয়াছিল, এই রাজা কর্ত্তৃক সেই [পুরাতন] দানপথ পুনরায় প্রকাশিত হইয়াছে।

(১৫)

 একদিকে হিমালয়, অপরদিকে শ্রীরামচন্দ্রের কীর্ত্তিচিহ্ন সেতুবন্ধ,—একদিকে বরুণ-নিকেতন অপরদিকে লক্ষ্মীর জন্মনিকেতন [ক্ষীরোদ-সমুদ্র,]—এই চতুঃসীমাবচ্ছিন্ন সমগ্র ভূমণ্ডল সেই রাজা নিঃসপত্নভাবে উপভোগ করিয়াছেন।


  1. বিন্ধ্যগিরি এক সময়ে গজেন্দ্রগণের বিহার-ক্ষেত্র বলিয়া পরিচিত ছিল। চাঁদকবির “পৃথ্বীরাজ রাসো” গ্রন্থে তাহার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। “ঐতিহাসিক চিত্রের” প্রথম পর্য্যায়ের প্রথম বর্ষের পত্রিকার ১৩১ পৃষ্ঠায় অনুবাদ সহ এতদ্বিষয়ক চাঁদকবির শ্লোকগুলি দ্রষ্টব্য।
  2. পৌরাণিক আখ্যানগুলি সূচিত হইয়াছে। ভার্গবের [পরশুরামের] দানশীলতার উল্লেখ করিতে গিয়া, মহাকবি ভবভূতি “মহাবীর চরিতে” [দ্বিতীয় অঙ্কে] তাহাকে অলৌকিক বলিয়াই লিখিয়া গিয়াছেন,—

    “उत्‌पत्ति र्जमदग्नितः स भगवान् देवः पिनाकी गुरुः
    वीर्य्यं यत्तु न तद्गिरां पथि नु तद्व्यक्तं हि तत् कर्म्मभिः।
    त्यागः सप्त-सप्त-समुद्र-मुद्रित-मही-निर्व्याज-दानावधिः
    सत्यब्रह्म तपोनिधे र्भगवतः किं वा न लोकान्तरम्॥”

  3. মূল শ্লোকে বিক্রমাদিত্যের নাম নাই,—“শকদ্বিষি” বলিয়া পরিচয় আছে।

৪৪