পাতা:গৌড়লেখমালা (প্রথম স্তবক).djvu/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লেখমালা।

কিরূপ ছিল, ইহাতে তাহার কিছু কিছু পরিচয় লাভের সম্ভাবনা আছে। তজ্জন্য ইহা সমাদর লাভের যোগ্য।

 এই শিলা-লিপির পংক্তি-সংখ্যা ১৯; তাহাতে সংস্কৃতভাষা-নিবদ্ধ ১৬টি শ্লোক উৎকীর্ণ রহিয়াছে। তাহা প্রস্তর-ফলকের ১ ফুট ১১ ইঞ্চ × ১ ফুট ২ ইঞ্চ পরিমিত স্থান অধিকার করিয়ালিপি-পরিচয়। রাখিয়াছে। অক্ষরগুলি ঘন-সন্নিবিষ্ট হইলেও, অক্ষুণ্ণ অবস্থায় বর্ত্তমান আছে। লিপিটি যে বহুযত্নে উৎকীর্ণ হইয়াছিল, তাহাতে সংশয় নাই। ইহা বিহার-প্রদেশে উৎকীর্ণ হইলেও, অক্ষরগুলির মধ্যে অনেক প্রাচীন বঙ্গাক্ষর বর্ত্তমান আছে। এক সময়ে এই অক্ষর যে বঙ্গদেশের চতুঃসীমার বাহিরেও ব্যবহৃত হইত, ইহাতে তাহার পরিচয় প্রকাশিত হইয়া রহিয়াছে। এই লিপিকে পাল-সাম্রাজ্যের প্রথম শতাব্দীর শেষভাগের উত্তর ভারতীয় লিপির আদৰ্শ বলিয়া গ্রহণ করা যাইতে পারে।

 ইহাতে [১৪ পংক্তিতে] একটি বজ্রাসন-প্রতিষ্ঠার কথা উল্লিখিত আছে। প্রতিষ্ঠাতার নাম বীরদেব। তাঁহারই জীবন-কাহিনীর বর্ণনা করিতে গিয়া, কবি প্রসঙ্গক্রমে নানা ঐতিহাসিকলিপি-বিবরণ। তথ্যের পরিচয় প্রদান করিয়া গিয়াছেন। উল্লেখযোগ্য তথ্যগুলি এই;—(১) ইন্দ্রগুপ্তের পুত্র বীরদেব (জালালাবাদ-উপত্যকার) নগরহার নামক স্থানের ব্রাহ্মণবংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। (২) তিনি বেদাদিশাস্ত্রের অধ্যয়ন সমাপ্ত করিয়াছিলেন; বৌদ্ধমতের অনুরাগী হইয়া [অধ্যয়নার্থ] কণিষ্ক-বিহারে গমন করিয়াছিলেন। (৩) তথায় সর্ব্বজ্ঞশান্তি নামক আচার্য্যের নিকট শিক্ষালাভ করিয়া এবং বৌদ্ধমতে দীক্ষিত হইয়া, বীরদেব (বুদ্ধগয়াধামের) মহাবোধি দর্শন করিবার উদ্দেশ্যে, প্রাচ্য-ভারতে আগমন করিয়াছিলেন। (৪) তথায় দীর্ঘকাল যশোবর্ম্মপুর নামক [তৎকাল-প্রসিদ্ধ] বৌদ্ধ-বিহারে অবস্থিতি করিয়া, তিনি দেবপাল নামক ভুবনপালের নিকট পূজা প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। (৫) এই বৌদ্ধযতি দুইটি চৈত্য প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। প্রশস্তিতে কবি বা শিল্পীর পরিচয় উল্লিখিত নাই। প্রস্তর-ফলকটি এক্ষণে বিহার-নগরের যাদুঘরে রক্ষিত হইতেছে।


প্রশস্তি-পাঠ।

 
श्रीमानसौ जयति सत्वहित-प्रवृत्त-
सन्मानसाधिगत-तत्त्वनयो मुनीन्द्रः।
क्लेशात्मनां दुरित-नक्र-दुरासदान्तः

৪৬