নারায়ণপালদেবের তাম্রশাসন।
[ভাগলপুর-লিপি]
প্রশস্তি-পরিচয়।
এই তাম্রশাসনখানি ভাগলপুরে আবিষ্কৃত হইয়াছিল বলিয়া, “ভাগলপুর-লিপি” নামে সুপরিচিত। ইহা নারায়ণপালদেবের তাম্রশাসন। এই শাসনখানি এক্ষণে কলিকাতা-নগরেআবিষ্কার-কাহিনী। এসিয়াটিক্ সোসাইটির পুস্তকাগারে রক্ষিত হইতেছে। ইহা কিরূপে ভাগলপুরে আসিয়াছিল, তাহা বিস্মৃতিগর্ভে বিলীন হইয়া গিয়াছে। আবিষ্কৃত হইবার পর, পাঠোদ্ধারের জন্য, এই শাসনলিপি ডাক্তার রাজেন্দ্রলালের হস্তে ন্যস্ত হইয়াছিল।
ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল যেরূপ পাঠোদ্ধারে কৃতকার্য্য হইয়াছিলেন, তাহা তাঁহার একখানি গ্রন্থে[১] এবং সোসাইটির পত্রিকায়[২] মুদ্রিত হইয়াছিল। তাহাতে ভ্রমপ্রমাদের অভাব ছিল না;পাঠোদ্ধার-কাহিনী। অনেকস্থলে অনেক মনঃকল্পিত পাঠও মুদ্রিত এবং ব্যাখ্যাত হইয়াছিল। উত্তরকালে ভিয়েনা-নিবাসী ডাক্তার হুল্জ্, তাম্রপট্ট হইতে প্রতিলিপি গ্রহণ করিয়া, এই শাসন-লিপির পাঠোদ্ধারে ব্যাপৃত হইয়াছিলেন। তাঁহার উদ্ধৃত পাঠই[৩] এক্ষণে এই তাম্রশাসনের মূলানুগত পাঠ বলিয়া সুপরিচিত।
পাঠোদ্ধারের পর ব্যাখ্যাকার্য্যে হস্তক্ষেপ করিয়া, ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল এই শাসন-লিপির প্রকৃত ব্যাখ্যা উদ্ঘাটিত করিতে পারেন নাই। তাঁহার ব্যাখ্যা যে কি জন্য মূলানুগত হইতেব্যাখ্যা-কাহিনী। পারে নাই, তাহা “ঐতিহাসিক চিত্রে”[৪] প্রকাশিত হইয়াছিল। ডাক্তার হুল্জের ব্যাখ্যাও সকল স্থলে মূলানুগত হইয়াছে বলিয়া স্বীকার করিতে সাহস হয় না। কারণ, তিনিও অনেক কষ্টকল্পনার অবতারণা করিয়া গিয়াছেন।[৫]
- ↑ Indo-Aryans,
- ↑ J. A. S. B. Vol. XLVII, p. 584.
- ↑ Indian Antiquary, Vol. XV, p. 304.
- ↑ ঐতিহাসিক চিত্র [প্রথম পর্য্যায়] প্রথম বর্ষ।
- ↑ ডাক্তার হুল্জ্ দেবপালকে এবং জয়পালকে বাক্পালের পুত্র বলিয়া ব্যাখ্যা করিয়া গিয়াছেন। তাহার সহিত দেবপালদেবের [মুঙ্গেরে অবিষ্কৃত] তাম্রশাসনের উক্তির সামঞ্জস্য নাই। দূতকের প্রকৃত নাম কি, তাহা নির্ণয় করিতে না পারিয়া ডাক্তার হুল্জ্ তাঁহার নাম “পুণ্যকীর্ত্তি” বলিয়া সিদ্ধান্ত করিয়া গিয়াছেন! তথাপি ডাক্তার হুল্জ্ এই তাম্রশাসনের পাঠোদ্ধারে ও ব্যাখ্যা-কার্য্যে যেরূপ অধ্যবসায়ের এবং পাণ্ডিত্যের পরিচয় প্রদান করিয়া গিয়াছেন, তাহা প্রশংসার্হ।
৫৫