লেখমালা।
(১০)
যিনি পৃথিবী-পালনার্থ দিক্পালগণকর্ত্তৃক[১] বিভক্ত-শ্রী [গুণসমূহ][২] আত্ম-শরীরে ধারণ করিতেছেন, সেই পুণ্যোত্তর শ্রীমান্ নারায়ণপাল নামক পুত্রকে বিগ্রহপালদেব লজ্জাদেবীর গর্ভে জন্মদান করিয়াছিলেন। সেই পুত্র সমস্ত-সামন্ত-শিরোমণি-জ্যোতিঃ-সংস্পর্শ-সুশোভিত-পাদপীঠসংযুক্ত ন্যায়ার্জ্জিত[৩] রাজসিংহাসন আত্মচরিত্র-[জ্যোতিঃ]-সংস্পর্শে অলংকৃত করিতেছেন।
(১১)
চিত্তক্ষেত্রে পুরাণ-বর্ণিত পবিত্র বৃত্তান্তের ন্যায় প্রতীয়মান[৪] নারায়ণপালদেবের [ধর্ম্মার্থকামমোক্ষরূপ] চতুর্ব্বর্গ-নিধানভূত পবিত্র চরিত্রের অনুকরণ করিতে আরম্ভ করিবার জন্য সকল মহীপালই ইচ্ছা করিয়া থাকেন।
(১২)
সজ্জন-মনোমোদিনী সু-উক্তি দ্বারা তিনি সাতিবাহন[৫] রাজাকে [সত্যাপিত] অকাল্পনিক সত্যপুরুষ বলিয়া, এবং দানশীলতায় [কর্ণ নামক] অঙ্গাধিপতির [দানশীলতার] কাহিনী বিশ্বাসযোগ্য বলিয়া প্রতিপাদন করিয়া দিয়াছেন।
(১৩)
তাঁহার ইন্দীবরশ্যাম অসি-পত্র, রণস্থলে বিস্ফুরিত হইবার সময়ে, তাহাকে শত্রুগণ [ভয়াতিশয্যে] পীতলোহিত-বর্ণ-বিশিষ্ট বলিয়া দর্শন করিত।
- ↑
अष्टाभि र्लोकपालाना मात्राभि र्निर्म्मितो नृपः।”
সুবিখ্যাত মল্লিনাথ এই স্মৃতিবাক্য উদ্ধৃত করিয়া গিয়াছেন। এখানে “লোকপাল”-শব্দ “দিক্পাল”-অর্থেই ব্যবহৃত হইয়াছে। মনুসংহিতায় [৭।৩-৪] লোকপালগণের সংগৃহীত “মাত্রা” দ্বারা বিধাতাকর্ত্তৃক রাজা সৃষ্ট হইবার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। যথা,—
“अराजके हि लोकेऽस्मिन् सर्व्वतो विद्रुते भयात्।
रक्षार्थ मस्य सर्व्वस्य राजान मसृजत् प्रभुः॥
इन्द्रानिलयमार्काना मग्नेश्च वरुणस्य च।
चन्द्रवित्तेशयो श्चैव मात्रा निर्हृत्य शाश्वतीः॥”ইহাতেও অষ্ট-দিক্পালেরই উল্লেখ দেখিতে পাওযা যায়। ইন্দ্রাদি দশদিক্পালের যে পূজা প্রচলিত আছে, তাহাতে চন্দ্রসূর্য্যের পরিবর্ত্তে, ঈশান ও নিঋতি, এবং ব্রহ্মা ও অনন্ত নামক দুইটি অতিরিক্ত দিক্পালের পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়।
- ↑ এই শ্লোকটি, কিঞ্চিৎ পরিবর্ত্তিত আকারে, মহীপালদেবের এবং বিগ্রহপালদেবের তাম্রশাসনেও উদ্ধৃত হইয়াছে। তাহাতে “শ্রীর” পরিবর্ত্তে “গুণ”-শব্দ ব্যবহৃত হইয়াছে। মনুসংহিতোক্ত “মাত্রা”, এবং এই সকল তাম্রশাসনোক্ত “শ্রী” এবং “গুণ” একার্থ-বাচকরূপেই ব্যবহৃত হইযাছে।
- ↑ “ন্যায়োপাত্ত”-শব্দে “উত্তরাধিকার-সূত্রে প্রাপ্ত” বুঝিতে হইবে। ডাক্তার হুল্জ্ সেই ভাবেই ইহার ব্যাখ্যা করিয়া লিখিয়া গিয়াছেন,—“He adorned with his deeds the inherited throne.”
- ↑ “चेतः पुराण-लेख्यानि” একটি সুকৌশল-বিন্যস্ত প্রয়োগের নিদর্শন।
- ↑ সাতিবাহন রাজার কাহিনী “কথাসরিৎসাগরে” দ্রষ্টব্য। অন্ধ্ররাজগণের “সাতবাহন” উপাধি “সাতি-
৬৮