গরুড়স্তম্ভ-লিপি।
[বাদাল-প্রস্তরলিপি]
প্রশস্তি-পরিচয়।
দিনাজপুরের অন্তর্গত বাদাল নামক স্থানে কোম্পানী-বাহাদুরের একটি কুঠীবাড়ী বর্ত্তমান ছিল। তাহার অধ্যক্ষ [স্যর] চাৰ্লস্ উইল্কিন্স ১৭৮০ খৃষ্টাব্দের শীতকালে বাদালের তিন মাইলআবিষ্কার-কাহিনী। দূরবর্ত্তী একটি বনভূমির মধ্যে [প্রায় দ্বাদশ ফুট উচ্চ একটি ধ্বংসাবশিষ্ট প্রস্তর-স্তম্ভের গাত্রে] এই পুরাতন প্রশস্তি উৎকীর্ণ থাকিবার সন্ধান প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। সেই সময় হইতে, এই স্তম্ভ-লিপির কথা ক্রমে বিদ্বৎসমাজে সুপরিচিত হইয়াছে। বাদালের নিকটবর্ত্তী স্থানে অবস্থিত বলিয়া, ইহা “বাদাল-প্রস্তরলিপি” নামে কথিত হইত। ইহা বাদাল অপেক্ষা মঙ্গলবারি-হাটের অধিক নিকটবর্ত্তী বলিয়া, “মঙ্গলবারি-প্রস্তরলিপি”-নামেও কথিত হইতে আরম্ভ করিয়াছে। প্রকৃত প্রস্তাবে, এই প্রশস্তি একটি গরুড়-স্তম্ভের গাত্রে উৎকীর্ণ রহিয়াছে বলিয়া, ইহা “গরুড়স্তম্ভ-লিপি” নামেই কথিত হইবার যোগ্য।
এই স্তম্ভলিপি আবিষ্কৃত হইবার পর, মালদহের কুঠীর অধ্যক্ষ জৰ্জ উড্নী [১৭৮৩ খৃষ্টাব্দে] এবং মালদহের অন্তর্গত গুয়ামালতী কুঠীর অধ্যক্ষ ক্রেটন্ [১৭৮৬ খৃষ্টাব্দে] পরিদর্শন করিতেপাঠোদ্ধার-কাহিনী। আসিয়া, স্তম্ভ-গাত্রে আপন আপন নাম উৎকীর্ণ করিয়া গিয়াছিলেন; তাহা অদ্যাপি দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু উইল্কিন্স ভিন্ন, আর কাহারও, তৎকালে পাঠোদ্ধার-সাধনের চেষ্টা করিবার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায় না। উইল্কিন্স কিরূপ পাঠ উদ্ধৃত করিয়াছিলেন, তাহা আর জানিবার উপায় নাই। তিনি ইংরাজী ভাষায় যে মর্ম্মানুবাদ লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন, তাহাই [১৭৮৮ খৃষ্টাব্দে] এসিয়াটিক্ সোসাইটির পত্রিকায়[১] প্রকাশিত হইয়াছিল। সেই মর্ম্মানুবাদ পাঠে জানিতে পারা যায়,—উইল্কিন্স সকল শ্লোকের বিশুদ্ধ পাঠ উদ্ধৃত করিতে পারেন নাই। [১৮৭৪ খৃষ্টাব্দে] দিনাজপুরের কলেক্টর ওয়েষ্টমেকট্ পণ্ডিতবর হরচন্দ্র চক্রবর্ত্তি-সম্পাদিত একটি পাঠ প্রেরণ করায়, [শ্রীযুক্ত প্রতাপচন্দ্র ঘোষজকৃত ইংরাজী অনুবাদ সহ] তাহা সোসাইটীর পত্রিকায়[২] প্রকাশিত হইয়া, নানা গ্রন্থে ও প্রবন্ধে উদ্ধৃত হইতেছিল। কিন্তু চক্রবর্ত্তী মহাশয়, সপ্তম এবং ত্রয়োদশ শ্লোক ভিন্ন, আর একটি শ্লোকও
৭০