ষষ্ঠ অধ্যায়। వసి কুৰ্ম্ম নিৰ্ম্মাণ করেন। কামরূপের আক্রমণ প্রতিরোধ করার উদ্দেশুেই এই দুর্গ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। এই সময় গৌড়রাজ্য কতিপয় ভুক্তিতে বিভক্ত ছিল । পুণ্ডবৰ্দ্ধন ভুক্তি, তীরভূক্তি ও শ্ৰীনগরভূক্তি—এই তিনটা ভূক্তির নাম পাওয়া গিয়াছে। পাটলীপুত্র প্রদেশ তীরভূক্তির অন্তর্গত ছিল । উড়িষ্যার হিন্দুরাজ্যে ভুক্তিকে দগুপথ বলিত। ভুক্তিগুলি কতিপয় মগুলে এবং মণ্ডল গুলি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে বিভক্ত ছিল । মুসলমান আমলে ভুক্তিগুলি সরকার, মণ্ডলগুলি পরগণায় পরিণত হইয়াছিল। কয়েকটা গ্রাম লইয়া এক একটী বিষয় হইত। ধৰ্ম্মপাল নারায়ণসেবার উদ্দেশে পুণ্ড,বর্দ্ধন ভুক্তির অন্তঃপাতী ব্যাস্ত্রতট মণ্ডলান্তর্গত মহন্তা প্রকাশ বিষয়ের মধ্যবৰ্ত্তী ক্ৰৌঞ্চশ্বভ্র গ্রাম, গোপিপ্পালী গ্রাম, মাঠাশাম্মলী ও পলিতক গ্রাম দান করেন। এ সকল স্থান কোথায় এখন তাহ নিশ্চয় করা দুঃসাধ্য। বোধ হয়, এ সকল গ্রাম গৌড়ের নিকটবৰ্ত্তী ছিল, কারণ গৌড়ের নিকটেই এই তাম্রশাসন খানি পাওয়া গিয়াছে। তাম্রশাসনে শ্বভ্র, গঙ্গনিক, যানিক, যানক, সীমাবীট, অৰ্দ্ধস্রোতিকা, দ্বীপিকা, খাটিকা, জোলক ও গোমার্গ শব্দের বাবহার দৃষ্ট হয় । শ্বভ্র শব্দের প্রসিদ্ধ অর্থ গৰ্ত্ত, দ্বীপিকা শব্দের অর্থ ক্ষুদ্রদ্বীপ বা চর, খাটিক অর্থে খাড়ী, জোলক অর্থে জোলা । মালদহ জেলায় গঙ্গা নদীর যত পরিবর্তন হইয়াছে, ভারতবর্ষে এরূপ আর কুত্ৰাপি হয় নাই। গঙ্গা হইতে নির্গত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্রোত এই জেলার পশ্চিমাংশে প্রবাহিত হইত। এইরূপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্রোতকে পূৰ্ব্বে গঙ্গনিক বলিত। যানিক, যানক ও অৰ্দ্ধস্রোতিক শব্দের অর্থ নির্ণয় করা কঠিন। জৈন দ্যায়িক পরকর্মক্কং ও দেবকুলিকা শব্দে বিশেষ লক্ষণাক্রান্ত স্থান বুঝাইত। ধৰ্ম্মপালের তাম্রশাসনে প্রদত্ত গ্রামের চতুঃসীমা প্রদত্ত হইয়াছে।
পাতা:গৌড়ের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড).djvu/১২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।