১১৬ . গৌড়ের ইতিহাস। নারায়ণ পালদেবের পরমেশ্বর, পরম ভট্টারক ও পরম সৌগত বিশেষণ দৃষ্ট হয় । তিনি দেবমন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়া পাশুপতআচাৰ্য্যকে দেবসেবা নিৰ্ব্বাহাৰ্থ ভূমিদান করেন । ইহাতে জানা যাইতেছে—ধৰ্ম্মসম্বন্ধে তিনি পরম উদার ছিলেন । এই সময়ে বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রভাব ধীরে ধীরে অস্তমিত হইতেছিল। হিন্দুধৰ্ম্ম শনৈ: শনৈঃ পূৰ্ব্ব প্রাধান্ত লাভ করিতেছিল । রাজগণ প্রজাগণের সন্তোষ-বিধানার্থ হিন্দুদেবালয়ের প্রতিষ্ঠা ও তাহার ব্যয় নির্বাহাৰ্থ ভূমি দান করিতেছিলেন। এখন কোন দেবমন্দিরে পীড়িত ব্যক্তিগণের আশ্রয়দান বা চিকিৎসাবিধান দৃষ্ট হয় না ; কিন্তু পাণ্ডপত আচাৰ্য্য যাহাতে তদ্বিষয়ে মনোযোগী হন, রাজা এইরূপ আদেশ করিয়াছিলেন । পীড়িত ব্যক্তিদিগকে আশ্রয়দান ও তাহাদিগের চিকিৎসার ব্যবস্থা বৌদ্ধযুগের প্রধান বিশেষত্ব। ধৰ্ম্মপালের তাম্রশাসনে ‘মহাসান্ধিবিগ্রহিক ‘মহাক্ষপটলিক, মহাপ্রতীহার’, ‘মহাকৰ্ত্তাকৃতিক’, ‘মহাকুমারামত্য’, ‘রাজস্থানীয়োপরিক”, ‘দাশাপরাধিক’, ‘ক্ষেত্রপাল’, ‘প্রান্তপাল’, ‘কোষপাল ও দূতপ্রেষণিক এই সকল কৰ্ম্মচারীর নাম নাই। নারায়ণ পালের সময় রাজ্যবৃদ্ধি ও শাসন-পদ্ধতির উন্নতির সহিত নূতন নূতন রাজপদ স্বষ্টির আবশ্বক হইয়াছিল। ধৰ্ম্মপালের তাম্রশাসনে ‘খোল’ নামক কৰ্ম্মচারীর উল্লেখ আছে, নারায়ণ পালের তাম্রশাসনে নাই। ‘মহাক্ষপটলিক শব্দে দ্যুতাগার সমূহের কার্য পরিদর্শককে বুঝায়। ‘মহাসান্ধিবিগ্রহিক অর্থে সন্ধিবিগ্রহের প্রধান মন্ত্রী,'মহাপ্রতীহার'—প্রধান দ্বারপাল,“মহাকৰ্ত্তাকৃতির্ক’— সমুদয় প্রধান কাৰ্য্যের তত্তাবধারক, ‘মহাকুমারামাতা’ শব্দে যুবরাজের প্রধান অমাত্য, ‘রাজস্থানীয়োপরিক শব্দে—রাজস্থানীয় প্রধান শাসনকর্তা বুঝাইত। বৈশালীর ভগ্নাবশেষের মধ্যে “তীরভূক্ত পরিকাধিকরণস্ত” এই শব্দাঙ্কিত একটা শীল পাওয়া গিয়াছে । ইহাতে বোধ হয়,
পাতা:গৌড়ের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।