૨૭ গৌড়ের ইতিহাস । উড়িষ্যা কোন সময়ে কলিঙ্গের অন্তর্গত ছিল, মহারাজ অশোকের সময় উড়িষ্যা মগধ সাম্রাজ্যের অন্তভূক্ত হয়। ইহা অনেক দিন যাবৎ বৌদ্ধ রাজগণের অধীন থাকে। তালপত্রে লিখিত জগন্নাথদেবের মন্দিরে রক্ষিত মাদলাপঞ্জীতে খৃষ্টপূর্ব ৩১০১ বৎসর হইতে খৃষ্টপূর্ব ৫৭ অঙ্গ পর্যন্ত ১০৭ জন রাজার নাম আছে। ইহা কতদূর বিশ্বাসযোগ্য বলিতে পারি না । যবনেরা অনেকদিন উড়িষ্যায় আধিপত্য করে। আমার বোধ হয়, এই যবনের যবদ্বীপবাসী ছিল । খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে শবর জাতি উড়িষ্যা অধিকার করে । তাহারা অধিক দিন রাজত্ব করিতে পারে নাই । ঐ শতাব্দীর শেষ ভাগে কলিঙ্গরাজ জনমেজয় উড়িষ্যা অধিকার করেন। মঙ্গরাজ যযাতিকেশরী জনমেজয়ের পুত্র ছিলেন। যযাতিকেশরী শৈব ছিলেন। মহারাজ উদ্যোত কেশরীর সময় খণ্ডগিরিতে কতকগুলি গিরিগুহা খোদিত হয় । কেশরী বংশের রাজত্বকালে একাম্রকাননে ( ভুবনেশ্বরে ) ব্রহ্মেশ্বর মন্দির নিৰ্ম্মিত ও কটক নগর স্থাপিত হয়। যাজপুরে কিছুদিন এই বংশের রাজধানী ছিল। এই সময়ে উড়িষ্যায় শিল্পের প্রচুর শ্ৰীবৃদ্ধি হয়। ১১৩২খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত কেশরীবংশের রাজত্ব থাকে। অতঃপর গঙ্গবংশীয় রাজগণ উড়িষ্যায় রাজত্ব করেন । ইহাদিগের গজপতি উপাধি ছিল। চোরগঙ্গদেব উড়িষ্যা বিজয়ের চিহ্নস্বরূপ জগন্নাথদেবের মন্দির নিৰ্ম্মাণ আরম্ভ করেন । (ক) তাহার প্রপৌত্র অনঙ্গভীম (ক) জগন্নাথের মন্দির গাত্রে যে সকল বীভৎস চিত্র অঙ্কিত অাছে, তাহ দেখিলে অনুমিত হয় যে, মন্দিরটা বৌদ্ধ বামাচারক্ষেত্রে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। বুদ্ধধৰ্ম্ম ও সজোর মূৰ্ত্তি জগন্নাথ, বলরাম ও স্বভত্র। মূৰ্ত্তিরূপে পরিণত হইয়াছে। রামানুজের সময় হইতে জগন্নাথক্ষেত্র, বৈঞ্চৰক্ষেত্র হইয়াছে । চৈতস্তদেব, জগন্নাথক্ষেত্রের প্রসাদের মান বtড়াইয়াছেন। রাজা ষযাতিকেশী, জগন্নাথের বৌদ্ধক্ষেত্রকে বৈষ্ণবক্ষেত্রণ করেন । ইনিই বুদ্ধদেবকে বিষ্ণুর অবতাররূপে প্রচার করিয়া বৌদ্ধদ্বিগের সস্তোবাৰ্থ জগন্নাথের প্রসাদ ভোজনের কালে যে স্পর্শদোষ হয় না, তাহ প্রচার করেন।
পাতা:গৌড়ের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।