দ্বিতীয় অধ্যায়। 8న কালীন কোন রাজার নাম করেন নাই ; ইহাতে বোধ হয়, ঐ সময়ে পুণ্ড,রাজ্য কান্তকুজরাজ হর্ষবৰ্দ্ধনের রাজ্যের অধীন ছিল । এই সময়ে বঙ্গ ও ত্রিপুরার মধ্যে একটা সাগর-শাখা বিস্তৃত ছিল । রামপালের নিকট মেঘনাদ নদ সমুদ্রে পড়িয়াছিল। হুয়েনসাং লিখিয়াছেন,—এদেশের পুরুষের টুপী ব্যবহার করে। স্ত্রীলোকেরা স্কন্ধ পৰ্য্যন্ত বস্ত্র দ্বারা আবৃত করে । এদেশের লোক সাধারণতঃ মৃত্তিকানিৰ্ম্মিত গৃহে বাস করে। গৃহের ছাদ সাধারণতঃ তৃণদ্বারা আচ্ছাদিত । গৃহের প্রাচীর ও প্রাঙ্গণ গোময়লিপ্ত। ধনীলোকেরা ইষ্টক-নিৰ্ম্মিত গৃহে বাস করে । নগরের রাস্তার উভয় পাশ্বে পণ্যপরিপূর্ণ বিপণিশ্রেণী । চণ্ডাল, নট ও মাংসবিক্রেতৃগণ নগরের বহির্ভাগে বাস করে । এদেশের লোক ধান্ত, মুগ, যব, তিল, দধি, দুগ্ধ, নবনীত, স্কৃত ও বিবিধ ফলমূল আহার করে। মৎস্ত, ছাগমাংস ও মৃগমাংস ভক্ষণে ইহাদের আপত্তি নাই। বৈশু ও শূদ্রেরা মদ্য পান করে। স্বর্ণ ও মুদ্র অধিক প্রচলিত নাই। দ্রব্যাদির বিনিময়ে বাণিজ্য হয় । ক্রয়বিক্রয়ে কড়ির ব্যবহার হয়। “ ত্রিশ বৎসর বয়সের পূৰ্ব্বে অধ্যয়ন শেষ করিয়া গৃহস্থাশ্রমে প্রবিষ্ট হয়। লোকে ধৰ্ম্মবিশ্বাসী ও বিষয়মুখবিরাগী। প্রায় কেহ মিথ্যাবাদী ও প্রবঞ্চক নয়। প্রজাগণের নিকট হইতে রাজার উৎপন্ন দ্রব্যের ষষ্ঠাংশ করম্বরূপ গ্রহণ করেন । কাহাকে ও বেগার খাটান হয় না ।
পাতা:গৌড়ের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।