পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১১৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের কলা
৮১

দ্বিতীয়া তৃতীয়ার যে আব্‌ছায়া আলোতে চাঁদের অন্ধকার অংশের যে একএকটু নজরে পড়ে, তাহাও চাঁদের নিজের আলো নয়। তবে কাহার আলো? জ্যোতিষীরা ইহার মজার উত্তর দিয়াছেন। তাঁহারা বলেন, ইহা চাঁদের উপরকার জ্যোৎস্নার আলো। চাঁদ যেমন আামাদের পৃথিবীতে জ্যোৎস্না দেয়, পৃথিবী তেমনি চাঁদের উপরে ঐরূপ জ্যোৎস্না দেয়।

 বোধ হয় আমার কথা বুঝিলে না। আচ্ছা, মনে কর, তুমি যেন চাঁদের উপরে গিয়া দাঁড়াইয়াছ এবং সেখান হইতে পৃথিবীকে দেখিতেছ। পৃথিবীকে তুমি একটা খুব বড় চাঁদের মতই দেখিবে। যদি অমাবস্যার দিন বা তাহার দু-তিন দিন পরে তুমি চাঁদের অন্ধকার দিকটায় থাক, তাহা হইলে তুমি পৃথিবীকে পূর্ণিমার চাঁদের মত প্রায় সম্পূর্ণ গোলাকার দেখিতে পাইবে। তথন পৃথিবীর আলো—ঠিক্‌রাইয়া গিয়া চাঁদের যে অন্ধকার অংশে তুমি দাঁড়াইয়া আছ, তাহাতে জ্যোৎস্না দেখাইতে থাকিবে। ষষ্ঠী সপ্তমীর চাঁদের অন্ধকার অংশেও পৃথিবীর জ্যোৎস্না পড়ে, কিন্তু তখন চাঁদের উজ্জ্বল অংশের আলোটা এত বেশি হয় যে, তাহার অন্ধকার অংশে পৃথিবীর জ্যোৎস্না পড়িলেও তাহা নজরে পড়ে না। অন্ধকার ঘরে একটা মাটির প্রদীপ জ্বালাইলেও তাহাকে খুব উজ্জ্বল দেখায়, কিন্তু যে ঘরে ইলেক্‌ট্রিক আলো জ্বলিতেছে, সেইখানে ঐ প্রদীপ জ্বালাইলে তাহার আলো চোখেই পড়ে না। ইহাও যেন সেই রকম। পৃথিবীতে চাঁদ যে জ্যোৎস্না দেয় তাহার আলো কত তোমরা দেখিয়াছ। কিন্তু চাঁদে পৃথিবী যে জ্যোৎস্না দেয় তাহার আলো পৃথিবীর জ্যোৎস্নার প্রায় তেরো গুণ। তাহা হইলে দেখ, চাঁদে জ্যোৎস্না উঠিলে বেশি অন্ধকার থাকে না।