পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৮৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩৮
গ্রহ-নক্ষত্র

 সেকালে এখনকার মত যেখানে সেখানে ভাল কাচ পাওয়া যাইত না। ভাঙা চশ্‌মার পরকলা কাঠের চোঙের মধ্যে পুরিয়া তিনি পরীক্ষা করিতে লাগিলেন। তাঁহার এই কাজ দেখিয়া বাহিরের লোকে ভাবিতে লাগিল গ্যালিলিয়ো পাগল হইয়াছেন। তাহা না হইলে আহার-নিদ্রা ত্যাগ করিয়া লোকটা কাচ জোড়া দিয়া সময় কাটাইবে কেন? গ্যালিলিয়ো কিন্তু লোকের হাসি তামাসা গ্রাহ্য না করিয়া কাজ করিতে লাগিলেন। শেষে তাঁহার শ্রম সার্থক হইল,—একদিন দেখিলেন, তাঁহার কাঠের চোঙের ভিতরকার কাচগুলি দিয়া দূরের জিনিসকে সত্যই কাছে দেখায়। ভাবিয়া দেখ সেদিন গ্যালিলিয়োর কত আনন্দ! তিনি তাঁহার বন্ধুবান্ধবদিকে ডাকিলেন এবং রাত্রিতে ঐ যন্ত্র দিয়া আকাশের গ্রহনক্ষত্র দেখিতে হইবে বলিয়া প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন।

 সন্ধ্যা হইল,—সেদিন পূর্ব্ব-আকাশে বৃহস্পতি জ্বল্-জ্বল্ করিয়া জ্বলিতেছিল। গ্যালিলিয়ো তাঁহার প্রথম দূরবীণ দিয়া বৃহস্পতিকে দেখিতে লাগিলেন। যন্ত্রে একবার মাত্র চোখ লাগাইয়া তিনি আর স্থির থাকিতে পারিলেন না; সমস্ত গাম্ভীর্য্য ত্যাগ করিয়া আনন্দে নৃত্য করিতে লাগিলেন! বন্ধুবান্ধবেরা অবাক্ হইয়া পঞ্চাশ বৎসরের বুড়োর পাগলামি দেখিতে লাগিলেন। যে গ্রহটিকে এ পর্য্যন্ত আলোর বিন্দুর মত দেখা যাইত, তাহাকে প্রকাণ্ড আকারে দেখা গেলে এবং তাহার চারিদিকে চারিটি চাঁদকে ঘুরিতে দেখিলে যে, কত আনন্দ হইতে পারে, গ্যালিলিয়োর বন্ধুবান্ধবেরা তাহা বুঝিলেন না। তোমরা কি মনে করিতেছ জানি না,—কিন্তু তোমরা যদি ঐ রকমে নিজের চেষ্টায় গ্রহ-উপগ্রহ আবিষ্কার করিতে পারিতে, তাহা হইলে তোমরাও আনন্দে ঐ রকম অধীর হইতে।

 তোমরা হয় ত ভাবিতেছ, এই রকম একটা বড় আবিষ্কার করায় গ্যালিলিয়ো দেশের লোকের কাছে এবং রাজার কাছে খুব সম্মান