পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২০৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৫৬
গ্রহ-নক্ষত্র

বলা যায়। না। কিন্তু বৃহস্পতি ও শনির মত দেহে গরম বাষ্পই অধিক আছে বলিয়া ইহার ওজনটা খুব বেশি নয়। ইউরেনসের ওজন মোটে চৌদ্দটা পৃথিবীর ওজনের সমান।

 তোমরা মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনির বিবরণে দেখিয়াছ, সূর্য্য হইতে যাহারা বেশি দূরে থাকে, তাহাদের সূর্য্য-প্রদক্ষিণের পথও বেশি লম্বা হয়। ইউরেনস্ শনির বাহিরে থাকিয়া সূর্য্যকে ঘুরিতেছে, এজন্য শনির চেয়ে অধিক পথ না চলিলে সে সূর্য্যকে চক্র দিয়া আসিতে পারে না। তার উপরে সে চলেও বড় ধীরে ধীরে। পৃথিবী চলে সেকেণ্ডে ঊনিশ মাইল করিয়া, কিন্তু ইউরেনস্ সেকেণ্ডে চারি মাইলের বেশি চলিতে পারে না। এই-সব কারণে একবার সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসিতে সে চুরাশী বৎসর কাটাইয়া দেয়। তাহা হইলে দেখ, ইউরেনসের এক বৎসর আমাদের চুরাশী বৎসরের সমান।

 বৎসরের পরিমাণ এত বড় হইলেও, ইহার দিনগুলা খুব ছোট। ইউরেনস্ সাড়ে নয় ঘণ্টায় একবার নিজের মেরুদণ্ডের চারিদিকে ঘুরিতে পারে। তাহা হইলে বুঝা যাইতেছে, আমাদের দিনরাত্রি যেমন চব্বিশ ঘণ্টায়, ইউরেনসের দিনরাত্রি সেইরূপ সাড়ে নয় ঘণ্টায়।

 কিন্তু ইহার ঘোরাঘুরিতে একটু বেশ মজা আছে। তোমাদিগকে আগেই বলিয়াছি, সূর্য্যের রাজ্যে যত ছোট বড় গ্রহ-উপগ্রহ আছে তাহাদের সকলেই এক পাকে ঘুরে। অর্থাৎ সকল ঘড়ির কাঁটা যেমন বাঁদিক হইতে ডান দিকে চলে, সকল গ্রহ-উপগ্রহেরা ঠিক্ সেই রকমেই এক পাকে চলা-ফেরা করে। কিন্তু ইউরেনস্ সাড়ে নয় ঘণ্টায় যখন নিজের মেরুদণ্ডের চারিদিকে পাক খায়, তখন এই নিয়ম মানিয়া চলে না। সে ঠিক উল্টা পাকে ঘুরপাক খায়। ইউরেনসের এই সৃষ্টিছাড়া ব্যবহারে পণ্ডিতেরা কিছুদিন চিন্তিত ছিলেন। এখন ইহার একটা কারণ জানা গিয়াছে।